বকেয়া বেতনের দাবিতে কালিয়াকৈরের মাহমুদ জিন্স কারখানার শ্রমিকরা গতকাল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলার সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
এ অবস্থায় ঘটনাস্থলের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কারখানা শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা মাহমুদ জিন্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের তিন মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। এ ছাড়াও স্টাফদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া। এসব টাকা চাইতে গেলেই মালিকপক্ষ ‘কাল-পরশু দেওয়া হবে’ বলে টালবাহানা করে। গত বুধবার বিকালে শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের জন্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হলেও স্টাফদের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। পরে স্টাফরা রাতেই কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে পুলিশ রাতে বুঝিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এরপর গতকাল সকালে স্টাফরা কারখানায় গিয়ে বেতন চাইতে গেলে কর্তৃপক্ষ আবারও টালবাহানা শুরু করে। এরপর স্টাফরা শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
একপর্যায়ে শ্রমিক ও স্টাফরা বিক্ষোভ সহকারে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাভার ক্যান্টনমেন্ট থেকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন। শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দফায় দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। পরে দুপুরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাহমুদ জিন্স কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাফি আহমেদ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শ্রমিকরা মালিকের উদ্দেশে ছয় দফা দাবি প্রস্তাব করেন। দাবি না মানা হলে মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান করার হুঁশিয়ারি দেন তারা। পরবর্তীতে মালিকপক্ষ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কয়েক দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিকাল ৩টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান। কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহাম্মেদ বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে মাহমুদ জিন্স কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।