জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনটি তৈরির শুরু থেকে বা এনআইডি স্বরাষ্ট্রে স্থানান্তরে সব সময়ই বিরোধিতা করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে এবং স্মারকলিপি দিয়ে প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসা ইসি সচিবের তোপ ও শাস্তির মুখেও পড়েছেন কর্মকর্তারা। তারপরও নিজেদের হাতে জন্ম নেওয়া এনআইডির ভাগ ছাড়তে চাননি তারা। এবার এনআইডি কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ বাতিল সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারির কার্যকর উদ্যোগ নিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও এনআইডির প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি সিইসিকে দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লব ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শাসনামলের পতনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে।
ফলস্বরূপ অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নবযাত্রা শুরু করেছে। আপনি অবগত আছেন যে, ২০০৭-০৮ সালে দল-মত নির্বিশেষে সবার আস্থার জায়গা থেকে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনডিপিসহ ৯টি আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার আর্থিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মহামান্য আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ নাগরিকের ডেমোগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয়ভাবে ভোটার ডাটাবেজ গড়ে তোলা হয়।
সংগঠনটি আরও জানায়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষিত থাকায় কোনো তথ্য বিকৃতিসহ তথ্যের অপব্যবহারের সুযোগ কম। বর্তমানে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে ডাটাবেজ ম্যানুপুলেট করার আশঙ্কা দেখা দেবে এবং বিদ্যমান চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স বিনষ্ট হবে।