চট্টগ্রামে গত সোমবার এক দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুজন। চলতি সেপ্টেম্বরের ১০ দিনে মৃত্যু হয় চারজনের। গতকাল এক দিনে আক্রান্ত হন ১৬ জন। বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও সরব থেকে চোখ রাঙাচ্ছে এডিস মশা। কিন্তু মশা মারায় নেই কোনো কর্মসূচি। নীরব ভূমিকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ফলে প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী। আতঙ্কে রয়েছেন তারা। অভিযোগ আছে, চসিক লোকদেখানো মশক নিধন কর্মসূচি শুরু করে। কিন্তু ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এ কর্মসূচি চোখে পড়ে না।
সিভিল সার্জন কার্যালয়সূত্রে জানা যায়, সোমবার এক দিনেই নগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে চট্টগ্রামে মোট মারা যান নয়জন এবং আক্রান্ত হন ৭৩০ জন। আক্রান্তের মধ্যে মহানগরে ৪৬০ এবং ১৫ উপজেলায় ৩২৪ জন।
গত আগস্টের ৩১ দিনে ২০২ জন আক্রান্ত হলেও চলতি মাসের ১০ দিনেই আক্রান্ত হন ১৩২ জন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। গত কয়েক দিনে আক্রান্তের হারও বাড়ছে। তাই সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। এক দিনে দুজনের মৃত্যুর পর আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি।
উপজেলার ডেঙ্গু কর্নারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রেখেছে চমেক হাসপাতাল।’
চসিকসূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ মার্চ চসিকের তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী মশক নিধন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া ২ জুলাই চসিক ডেঙ্গু নিয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা করেছিল। সেখানে নাগরিকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শও দেয়া হয়। এরপর আর কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্থবির হয়ে পড়ে মশক নিধন কার্যক্রম। কিন্তু ১৭ আগস্ট চসিক আবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচি শুরু করলেও তা দৃশ্যমান নয়। চসিকের ৪১ ওয়ার্ডে নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও এখন তা হয় না। তা ছাড়া অন্তত ৩০ জন কাউন্সিলর এখনো আত্মগোপনে। এ কারণেও মশক নিধন কার্যক্রমে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চসিকে বর্তমানে ফগার মেশিন আছে ১৫০টি এবং স্প্রে মেশিন আছে ২৪০টির বেশি। চসিকের মশক ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহী বলেন, ‘১৭ আগস্ট নতুন পরিকল্পনায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিদিন দুটি করে ড্রেনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’