কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধান সংস্কার জরুরি বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, সংবিধানের গণতন্ত্রায়ণের সঙ্গে জনগণের ক্ষমতায়ন জরুরি। নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে এমন কিছু সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া জরুরি।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘আগামীর বাংলাদেশ জনগণের ক্ষমতায়ন ও কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি অ্যানালাইসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (সিপিএএ) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সিপিএএর সভাপতি ড. এম শরীফুল আলম। গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. শাফিউল ইসলাম।
প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মো. ইকতেদার আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার ফয়েজ আহমেদ, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফরোজা বুলবুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আতিয়ার রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক সায়েদা সুলতানা রাজিয়া, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের আসজাদুল কিবরিয়া, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ড. মির্জা হাসান, সেন্টার ফর অল্টারনেট ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ড. মীর মঞ্জুর মাহমুদ।
বৈঠকে বক্তারা আরও বলেন, বিচার বিভাগকে কার্যকর করতে হবে। স্বাধীন বিচার বিভাগব্যবস্থার সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ, রাজনৈতিক অধিকার, সুশাসন ও মানবাধিকার জড়িত। একই সঙ্গে সরকারের পরিবর্তনে অনেক প্রতিষ্ঠান কার্যকারিতা হারিয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তাই কার্যকর সরকারের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থার সংস্কার খুবই জরুরি। এ ছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে ব্যাপক সংস্কার দরকার। এই দুই খাতে ব্যয় বাড়ছে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সংস্কার হতে হবে অর্গানিক। এ দেশের সংস্কার যেন কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রকল্পের আওতায় না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। আর রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংস্কার মানে কোনো টেকনোক্রেটিক সমাধান নয়। এ দেশের মানুষ নিজস্ব মতের প্রতিফলন দেখতে চায়। কোনো বিশেষ শ্রেণির এলিট দ্বারা শাসিত হতে চায় না। পশ্চিমা অনুদাননির্ভর এনজিও গোষ্ঠীর বায়বীয় সুপারিশ সমস্যার কোনো সমাধান নয়। ক্রিয়াশীল নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম যে কোনো দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তবে এসব অ্যাক্টরকে সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।