দেশে বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল সারা দেশে ডেঙ্গু নিয়ে আরও ৮৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১০৮-এ। এ সময় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মশাবাহিত রোগটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫-এ।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৮৮ জন রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১১৩, বরিশালে ৭১, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৩, খুলনায় ৪৮, ময়মনসিংহে ৯ ও রাজশাহীতে ২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৩ হাজার ১০৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এ সময় মারা যাওয়া ১২৫ জনের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী ও ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ। রাজশাহী থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে দুজন নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) দুর্গাপুর উপজেলার বেলাল (৩৫) ও বাগমারা উপজেলার সাকিলা (২০) চিকিৎসাধীন। আলমডাঙ্গার রোকনুজ্জামান নিজ এলাকা ছাড়া বাকিরা ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে ভিন্ন ভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে রোগীর চাপ বাড়লে আলাদা ওয়ার্ড করা হবে।
রামেক হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, পাবনার ঈশ্বরদীর রাফাত (২৩), নওগাঁর রহিদ (৪০), নগরীর মতিহার থানা এলাকার হাবিবা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের তিন বছরের আরশিয়া, আল আমিন (২৭) ও জেসমীন (১৭), চারঘাটের মুনসুর আলী (৬০), গোদাগাড়ী উপজেলার আতিকুল (৩০), বাঘা উপজেলার সাথী (২০), চুয়াডাঙ্গা সদরের বিপ্লব (৮), দুর্গাপুর উপজেলার বেলাল (৩৫), বাগমারা উপজেলার সাকিলা (২০), নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ওমর আালী (৩১), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মো. রোকনুজ্জামান (৩৫) চিকিৎসাধীন আছেন।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে রামেক হাসপাতালটিতে মোট ১৫২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্র্তি হয়েছিলেন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৩৮ জন। র্বর্তমানে হাসপাতালে ১৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তবে হাসপাতালটিতে ডেঙ্গুতে কেউ মারা না গেলেও আইসিইউতে দুজন চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে তিন বছরের আরশিয়া ও আট বছরের বিপ্লব আছে। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন রোগীদের বয়স ১৭ বছর থেকে শুরু করে ৬০ বছরের মধ্যে। হাসপাতালটিতে সবচেয়ে পুরনো রোগী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে চুয়াডাঙ্গা সদরের বিপ্লব। তারা সবাই হাসপাতালের ১৩, ১৪, ১৬, ২৪, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালে ১৪ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে দুজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া আক্রান্তের মধ্যে দুটি শিশু আছে। তবে রোগীর চাপ বাড়লে এদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হবে।’