তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, স্বৈরতান্ত্রিক সরকার পতনের পর বিপ্লবী আকাক্সক্ষা নিয়ে আমরা নতুন সরকার গঠন করেছি। এখন দেশের গণতন্ত্রকে কীভাবে সুসংগঠিত করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি। কারণ ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। যেন জনগণের আকাক্সক্ষা ব্যর্থ হয়ে না যায়। গতকাল রাজধানীর কাঁটাবনে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে ‘সংকটে গণতন্ত্র’ নামে গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) আমিনুল করিম, সংকটে গণতন্ত্র বইয়ের লেখক আমীর খসরু প্রমুখ।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জনগণের দায়িত্ব নিয়ে নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গীকারে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু স্বৈরতান্ত্রিক পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার পর কীভাবে জনগণের জন্য কাজ করা যায়, জনগণের শক্তি কাজে লাগানো যায়, বর্তমান সরকার সেই দিকনির্দেশনা এখন দেয়নি। তারাও ঘুরে ফিরে আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতার ওপরে ভর করছে। গতানুগতিক আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা বৃদ্ধি করে ফেলেছে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের ব্যবসায়িক অবস্থা পরিবেশকে সচল করতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ সচল করতে হবে, আইনশৃঙ্খলার পরিবেশটা সুসংহত করতে হবে। যারা স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম সহযোগী ছিল, সেগুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা অবৈধ টাকা উপার্জন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এগুলো নিয়ে আমরা কোথাও দৃশ্যমান কিছু দেখতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তনের সুযোগে অনেক অস্বচ্ছ আকাক্সক্ষা সামনে চলে আসছে। এ আকাক্সক্ষাগুলো বন্ধ করা জরুরি। সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কারণ দেশের এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া চ্যালেঞ্জ। যদিও এই চ্যালেঞ্জে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। সেজন্য আমলাতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে অসম্ভব সম্ভাবনার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। ফলে কোনোভাবেই অস্বচ্ছ আকাক্সক্ষাকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শুধু একটা নির্বাচনের মাধ্যমে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় এসেছিল। সেই নির্বাচন ছিল ২০০৮ সালে। এরপর বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। এ সময়ে ক্ষমতায় ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ সরকার। এই মেয়াদোত্তীর্ণ সরকার অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় থাকতে ভারত, চীন ও দেশের অভ্যন্তরের কিছু গোষ্ঠীকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে খুশি রেখেছেন। দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।