চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম সবুজ আঙিনা বিপ্লব উদ্যান। অযত্ন-অবহেলায় এই উদ্যানটির প্রাণ প্রায় যাওয়ার পথে। এই অবস্থায় সবুজায়নের মাধ্যমে উদ্যানটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন, নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশকর্মীরা। গতকাল দুপুরে বিপ্লব উদ্যান নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান নাগরিকরা। চসিকের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। সভার শুরুতে বিপ্লব উদ্যানের পূর্বের ও বর্তমান অবস্থার ওপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চসিকের স্থপতি আবদুল্লাহ-আল-ওমর। মতবিনিময় সভায় প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ৮০ লাখ মানুষের বসবাস। এই নগরীকে সবার বাস উপযোগী করা লাগবে।
তাই বিপ্লব উদ্যান নিয়ে সবাইকে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া উড়াল সড়কের ডিভাইডারে পার্কিং স্পেস করা দরকার।
প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, বাসযোগ্য চট্টগ্রাম নগরী গড়তে চসিককে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। চট্টগ্রামে কোনো প্ল্যানিং ইনস্টিটিউশন নেই বলে নগরীতে জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। তাই চসিককে অনুরোধ করব উড়াল সড়কে অপরিকল্পিত র্যাম্প স্থাপন না করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে পত্র দিতে।
সভায় স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, বিপ্লব উদ্যানের সবুজায়নের পাশাপাশি ফুটপাতকে জনপরিসরে হাঁটার উপযোগী করতে হবে। চসিক আইন অনুসারে নগরের উন্মুক্ত স্থান রক্ষায় দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও বিপ্লব উদ্যানের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ উদ্যানের বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে। নাগরিকদের স্বার্থে বিপ্লব উদ্যানকে আবারও নাগরিকদের উদ্যান হিসেবে ফিরিয়ে আনতে হবে। আরেক স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, বিপ্লব উদ্যানে ডিজাইনের বাইরে প্রচুর স্থাপনা ও দোকান হয়েছে। আমরা স্থপতিদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগঠনের সব সদস্যকে বিপ্লব উদ্যানের ডিজাইনের বাইরে কোনো প্ল্যান না করার জন্য বলেছি। নগরীর সৌন্দর্যের স্বার্থে আমাদের বক্তব্য হলো অবিলম্বে বিপ্লব উদ্যান থেকে অননুমোদিত দোকান-স্থাপনা সরিয়ে গাছপালা লাগিয়ে সবুজায়নের ব্যবস্থা করা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক আসমা আকতার বলেন, আইন অনুযায়ী একটি উদ্যানে ২-৫ শতাংশের বেশি কংক্রিটের স্থাপনা রাখার সুযোগ নেই। কিন্তু বিপ্লব উদ্যানে এর চাইতে অনেক বেশি কংক্রিটের স্থাপনা বর্তমানে আছে। তাই এই উদ্যানকে সবুজায়ন করে সববয়সী নাগরিকের অবকাশ যাপনে পূর্বের ন্যায় ব্যবস্থা করতে হবে করপোরেশনকে। এ জন্য সবুজায়ন বৃদ্ধি করা লাগবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জাহিদুল করিম কচি, সালাউদ্দিন মো. রেজা, হাসান মারুফ রুমি, শফিক আনোয়ার, হুমায়ন কবির ও শাহনেওয়াজ প্রমুখ।