রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহতের তিন মাস হতে চলল। ১৬ জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র। আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর হামলা করেছিলেন হেলমেট ব্যবহার করে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা। এ ছাড়া হামলায় যুক্ত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতারা। ওইসব শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ নেতা এখন আন্ডারগ্রাউন্ড। এখন পর্যন্ত ওই হামলায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, পার্কের মোড় (শহীদ আবু সাঈদ চত্বর), মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ নেতাদের আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। ওই দিনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। আহত হন অনেকেই। ৫ আগস্টের পর থেকে হামলায় অংশগ্রহণকারী কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
অস্ত্রধারীর মধ্যে বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি রুমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ অনেকেই সেদিন পুলিশের সহযোগিতায় হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি বেরোবি শিক্ষক মো. মশিয়ার রহমান, মো. আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদও প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশ নেন।
এ ছাড়া কর্মকর্তা মো. রাফিউল হাসান (রাসেল), নুর নাবী, মনিরুজ্জামান, পলাশ মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, কর্মচারী নূর আলমসহ আরও অনেক কর্মচারী-কর্মকর্তা সেদিন ছাত্রদের বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হামলায় অংশ নেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকত আলী বলেন, ‘হামলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’