চট্টগ্রাম ওয়াসার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পানির বিল। কিন্তু তিন মাস ধরে ওয়াসার রাজস্ব আদায়ে ধস চলছে। কার্যত সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই রাজস্ব আদায়ে চলছে ভাটা। নানা অজুহাতে বিল আদায় করছেন না গ্রাহক। ফলে ওয়াসার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ওয়াসার রাজস্ব বিভাগসূত্রে জানা যায়, গেল জুনে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫ কোটি ৩১ লাখ, জুলাইয়ে ১৮ কোটি ৬৭ লাখ আর আগস্টে ১৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। কিন্তু সেপ্টেম্বরে আরেকটু বেশি আদায় হয়, ১৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তবে ওয়াসায় প্রতি মাসে গড়ে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। ৫ আগস্টের পর থেকে নানা অজুহাতে গ্রাহক বিল দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘অতীতের তুলনায় গত কয়েক মাস বিল আদায় তুলনামূলক কম হয়েছে। নানা অজুহাতে অনেক গ্রাহক বিল আদায় করছেন না। তবে সরকারি সংস্থার টাকা পরিশোধ না করে কোনো উপায় নেই। বরং পরে এটা গ্রাহকের জন্য বোঝা হয়ে যাবে। জরিমানা, সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয় বকেয়া বিলের গ্রাহকের বিরুদ্ধে।’
ওয়াসাসূত্রে জানা যায়, নগরে বর্তমানে ওয়াসার গ্রাহক আছেন প্রায় ৯৪ হাজার। তাদের কাছ থেকে বিল আদায়ে মিটার ইন্সপেক্টর আছেন ৩৭ জন। প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে নগরে পানি সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে ওয়াসার আবাসিকে ৯৩ এবং অনাবাসিকে ৭ শতাংশ পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বড় বকেয়ার বেশির ভাগই সরকারি বিভিন্ন আবাসিক ও অনাবাসিক গ্রাহকের। সরকারি প্রায় ৪৫টি প্রতিষ্ঠানই অন্তত ১০ বছর ধরে বকেয়া পরিশোধ করছে না। নগরে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ৫০ কোটি লিটার। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়া শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-১ ও ২ প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার করে ২৮ কোটি লিটার এবং মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার করে ১৮ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা হয়। এর সঙ্গে আছে গভীর নলকূপের পানি। সব মিলে দৈনিক পানি উৎপাদন করা হয় ৪৫ কোটি লিটার।