সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমান ও তার সহযোগীরা অর্থ তছরুপ, তথ্য বিকৃতি, অনুমোদনবিহীন ডিজিটাল স্বাক্ষরের ব্যবহার এবং পরিচয়, জালিয়াতি করেছে। তাই নানা জালিয়াতির অভিযোগে তাকে অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৩৫৩ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে। ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে কোম্পানি। এ ছাড়া সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণ না করার মাধ্যমে কোম্পানির ব্যবহৃত ভবনের মালিক গোলাম কুদ্দুসের ভাড়ার অর্থ সঠিকভাবে সমন্বয় করা হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারস (পিডব্লিউসি)।
জানা গেছে, অভিযুক্ত সাবেক সিইও মীর রাশেদ বিন আমান সোনালী লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা ছিলেন। যদিও পরবর্তীতে তিনি কুদ্দুসের মেয়েকে তালাক দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। নানা জালিয়াতির অভিযোগে রাশেদকে অপসারণ করা হয় এবং কোম্পানির পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে বিচার শুরুর আগেই বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সোনালী লাইফের পরিচালনা পর্ষদ স্থগিত করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। যে কারণে যুক্তরাজ্যভিত্তিক
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারস (পিডব্লিউসি) পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস জানতে পারেন, মীর রাশেদ বিন আমান আইডিআরএ পরিচালিত একটি অডিট প্রতিবেদনকে গোপন করেছেন। বিষয়টি জানার পরই তিনি প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারসকে (পিডব্লিউসি) কোম্পানির অভ্যন্তরীণ আর্থিক এবং ফরেনসিক তদন্তের জন্য নিয়োগ দেন। এটি নিজেই মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের সৎ উদ্দেশের প্রমাণ। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড থেকে ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে ৩৫৩ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে সোনালী লাইফ বলছে, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ২০২১ সালের আগে কোম্পানির পরিচালক ছিলেন না। তিনি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। মালিবাগে অবস্থিত মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের নিজস্ব ভবনটি প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য ২০১৩ সালে ভাড়া নেয় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এখনো ভাড়াটিয়া হিসেবেই আছে। কুদ্দুস ও কোম্পানির মধ্যে একটি ভাড়ার চুক্তিও রয়েছে। কোম্পানির সাবেক সিইও মীর রাশেদ বিন আমানের ৩৫৩ কোটি টাকা তছরুপ এবং রাশেদের আত্মীয়দের ১৬১ কোটি টাকা এবং নূর ই হাফজার নামে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে অবগত ছিলেন না মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস।