ভোটদানের জন্য যাচ্ছিলেন নির্দিষ্ট ভোট কেন্দ্রে। এ সময় পথে শিকার হন হামলার, হন গুরুতর আহত- এমন অভিযোগে শতাধিক ব্যক্তির নামে ঠুকলেন মামলা। মামলার বাদী রাজশাহীর সাজ্জাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। অথচ মামলার সময় তিনি নিজেই ছিলেন জেলে! এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১৭ আগস্ট নগরীর দামকুড়া থানায় শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নামে মামলাটি করেন সাজ্জাদ হোসেন। হামলাটি সংঘটিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের দিন- উল্লেখ করে মামলাটি করা হয়। অথচ ঘটনার দুই দিন আগে ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বরে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরিন ছিলেন তিনি। পরে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। মামলা দাখিলের সময় জেলে থাকার কথা স্বীকার করেছেন বাদী সাজ্জাদ হোসেন।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৬ অক্টোবর কোরবানির ঈদের দিন ছাগলে আমগাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারিতে পবা থানার খোলাবোনা গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন খুন হন। ওই সময় ওয়াজেদ আলী পবা থানার বেলুয়া খোলাবোনার কাবিল হোসেন, আজাদ আলী, সাজ্জাদ হোসেনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলার রায়ে আজাদ আলী ও কাবিল হোসেনের যাবজ্জীবন এবং সাজ্জাদ হোসেনকে ১০ বছর কারাদন্ড দেন। ২০১৭ সালের ২৯ মে সাজ্জাদ হোসেন এবং ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল আজাদ আলী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। তবে অন্য এক মামলায় গ্রেপ্তার হন সাজ্জাদ।
নিহত মামুনের ভাই রাশেদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা ও হামলার ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি আমাদের দুই ভাইকে আসামি করা হয়েছে। শুধু ভাইয়ের খুনিদের বিচারের দাবিতে মামলা করার কারণে আমাদের দুই ভাইকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। অথচ আমরা কখনোই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।’ ভুক্তভোগী সোহাগসহ মামলায় নাম থাকা একাধিক ব্যক্তি এটিকে স্রেফ হয়রানিমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ বিষয়ে নগরীর দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, তিনি কয়েকদিন হলো যোগদান করেছেন। ওই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। বাদী জেলে থাকলে তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।