টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভস্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা বেসরকারি খাত মোকাবিলা করছে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল ডিসিসিআই আয়োজিত ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজীকরণ : প্রেক্ষিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের সদস্য (ফিন্যান্স) এস এম লাভলুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব (পরিচালক, ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. ফারহানা আইরিছ এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘আমাদের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তবে এ হার আরও উন্নীত করতে হলে বন্দর এবং শুল্ক কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা হ্রাস, ব্যালান্স অব পেমেন্টের অবস্থার উন্নয়ন, বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়ানো এবং ব্যাংক ঋণের সুদহার যৌক্তিকভাবে কমানো জরুরি।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভস্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার, ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারি খাত মোকাবিলা করছে। এ ছাড়া বন্দরের আমদানি পণ্যের শুল্কায়নে পদ্ধতিগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা, নানা ধরনের জরিমানা আরোপের ফলে আমাদের ব্যবসায়িক খরচ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এস এম লাভলুর রহমান বলেন, ‘বন্দরে নিয়োজিত সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম চালু হলে কার্গো সুবিধা আরও ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানে আরও তিনটি কার্গো ভিলেজ স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দরগুলো পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে বন্দরে কনটেইনারসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, বিষয়টি মোকাবিলায় অটোমেশন কার্যক্রম বাড়ানো জরুরি।’
প্রকৌশলী মো. হাসান আলী বলেন, ‘দেশের ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে ২৩টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে একটি দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সব স্থলবন্দরে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এ ছাড়া স্থলবন্দরগুলোয় স্ক্যানিং সুবিধা দেওয়া সম্ভব হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হবে।’