খাদ্য শুধু জীবনই রক্ষা করে না, খাদ্য জাতিগোষ্ঠীর মর্যাদা, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং নিজেদের সমৃদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যসহ ভৌগোলিক বৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নানা জাতিগোষ্ঠীর ও বহুবৈচিত্র্যে ভরপুর বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের পছন্দনীয় বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় খাদ্য সুরক্ষার জন্য খাদ্যবন্ধনের (মানববন্ধন) আয়োজন করেন। গতকাল বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং বরেন্দ্র অঞ্চল জনসংগঠন ফোরামের পক্ষ থেকে রাজশাহীর তানোর উপজেলার হরিদেবপুরে খাদ্যবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। খাদ্যবন্ধনে বরেন্দ্র অঞ্চলের সাঁওতাল, মুন্ডা, পাহান, মাহালি, কড়া, রবিদাস, কর্মকার, মাল পাহাড়িয়া, তুড়ি, কোল, বাঁশফোড়, বর্মণ, পাহাড়িয়া, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যবাহী পছন্দের খাদ্য প্রদর্শন করে খাদ্য অধিকার রক্ষার দাবি জানান। অংশগ্রহণকারীরা তাদের এলাকার নিজেদের চাষকৃত এবং অচাষকৃত খাদ্যবৈচিত্র্যসহ বিভিন্ন শাকসবজির ও তৈরি করা খাদ্য হাতে নিয়ে খাদ্যবন্ধনে অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্রত্যেক জাতি ধর্মের এবং সাংস্কৃৃতিক বৈচিত্র্যের পছন্দের খাবার আছে। সেগুলো দিনে দিনে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। রাসায়নিক কীটনাশকের প্রভাব এবং একমুখী শস্যবৈচিত্র্য ফসল ফলানোর কারণে দিনে দিনে বৈচিত্র্যময় পছন্দের খাদ্যগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশি জাতের শস্য ফসল। আমাদের খাদ্য, আমাদের বীজ আমরাই সুরক্ষা করব। বীজের নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যের নিয়ন্ত্রণ অন্য মানুষের কাছে গেলে আমাদের পছন্দের খাবারের সংকট হবে।
খাদ্যবন্ধনে বক্তব্য দেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম, মাহালি সম্প্রদায়ের মনিকা মাহালি, পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের জয়ন্তী বালা।