বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে আহত ব্যবসায়ী শাহ আলম (৫৫)-এর খোঁজ রাখেননি কেউ। শাহ আলম রংপুর সিটি করপোরেশনের আমাশু কুখরুল খটখটিয়ার আবুল শাদি মিয়ার ছেলে। তার মা জরিনা বেগম। শাহ আলম রংপুর সিটি বাজারের পান-সুপারির ব্যবসা করতেন। গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজারের সামনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করে পুলিশ। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন শাহ আলম। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে শটগানের গুলি ও রাবার বুলেট লাগে। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তিনি মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলে অন্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে (পুরুষ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সরকারি ছুটি থাকার কারণে সুচিকিৎসা না পেয়ে সেখান থেকে ছাড়পত্র গ্রহণ করে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসাধীন থাকলেও প্রশাসন কিংবা অন্য কেউ তার খোঁজখবর নেননি। বর্তমানে তিনি রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এ চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ধারদেনা করে চিকিৎসা করলেও বর্তমানে টাকার অভাবে তার চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে না। অর্থাভাবে চরম বিপাকে পড়েছে শাহ আলমের পরিবার। সংসারের একমাত্র উপার্জক্ষম ব্যক্তি শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে উপার্জন করতে না পারায় তার পরিবার মানবেতন জীবন-যাপন করছে। শাহ আলমের শরীরে ছররা গুলি ও রাবার বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। শরীরে এখনো রয়েছে ছররা গুলি ও রাবার বুলেটের স্পিন্টার।
অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিন অতিবাহিত করছেন শাহ আলম। স্বাভাবিকভাবে তিনি কোনো কাজ বা চলাফেরা করতে পারেন না। তিনি বলেন, বেশিক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে পারি না আবার বসেও থাকতে পারি না। রাতে ঘুমাতে গেলে যন্ত্রণায় ঘুম কম হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, শরীরে থাকা ছররা গুলি ও রাবার বুলেটের স্পিন্টার যদি খুব অসুবিধা না হয় তাহলে এসব স্পিন্টার বের করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। স্পিন্টারগুলো খুবই ছোট, কেটে সঙ্গে সঙ্গে বের করা যায় এমনটিও না। স্পিন্টার খুঁজে বের করা খুব ক্রিটিক্যাল। শাহ আলম বলেন, গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজারের সামনে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্র-জনতাকে পানি সরবরাহ করে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তখন তাকে উদ্ধারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।