৮ জুলাই, ২০২০ ১০:০৬

যুক্তরাষ্ট্রে করোনার তাণ্ডব অব্যাহত, নিষিদ্ধের তালিকায় যুক্ত আরও ৩ স্টেট

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি:

যুক্তরাষ্ট্রে করোনার তাণ্ডব অব্যাহত, নিষিদ্ধের তালিকায় যুক্ত আরও ৩ স্টেট

করোনাভাইরাসের তাণ্ডব ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলসহ মধ্য আমেরিকার ৩৭ স্টেটে। যে সব স্টেট স্বাস্থ্যবিধি অবজ্ঞা করে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, সমুদ্র সৈকত, রেস্টুরেন্ট চালু করেছিল, সেগুলোতে এখন প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এর শীর্ষে রয়েছে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, আরিজোনা। লাফিয়ে লাফিয়ে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। এমন অবস্থায়ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অনুগতদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। 

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। অধিকন্তু ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, আক্রান্তদের ৯৯% এরই তেমন কিছু হচ্ছে না। অথচ, জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ ডাটা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যুর হার হচ্ছে ৪.৪%। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছে ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭ জন। এরমধ্যে মারা গেছে এক লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ জন। 

এদিকে, সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেকটিকাট স্টেটের করোনা পরিস্থিতি মাসাধিককাল যাবত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুধু তাই নয়, আক্রান্তের হার প্রত্যাশার চেয়েও ভালো বলে স্বাস্থ্য দফতর উল্লেখ করেছে। 

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আহবানে সাড়া না দিয়ে বাস্তবতার আলোকে লকডাউন শিথিলের পরিক্রমায় অবতীর্ণ হওয়ায় এই তিন স্টেটে জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেলওয়ারে, ক্যানসাস এবং ওকলাহোমা স্টেটকেও নিষিদ্ধের তালিকায় নিলো এই তিন স্টেট। এ নিয়ে মোট ১৯ স্টেট এলো এ তালিকায় অথাৎ এসব স্টেট থেকে কেউ এলে তাদেরকে অবশ্যই ১৪ দিনের স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে। এর আগে আরো ১৬ স্টেটকে এ তালিকায় নেয়া হয়। স্টেটগুলো হচ্ছে : আলাবামা, আরকানসাস, আরিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, আইওয়া, আইডোহো, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, নর্থ ক্যারলিনা, নেভাদা, সাউথ ক্যারলিনা, টেনেসী, টেক্সাস এবং ইউটাহ। এসব স্টেটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার নিউইয়র্কের হাসপাতালে ছিলেন মাত্র ৮৩৬ জন। সেদিন মারা গেছেন ১০ জন। একইদিন করোনা টেস্ট হয় ৫৬ হাজার ৭৩৫ জনের। পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে ৫৮৮ জনের অর্থাৎ ১.০৪%। এতদসত্বেও নিউইয়র্ক সিটির রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে খাবার গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়নি। স্টেট গভর্ণর এ্যান্ড্রু ক্যুমো মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংকালেও উল্লেখ করেছেন, আগে লকডাউন শিথিল করা স্টেটসমূহে পুনরায় ব্যাপকভাবে সংক্রমণের নেপথ্যে রয়েছে রেস্টুরেন্ট ও বার খুলে দেয়ার ঘটনা। আমরা সে ভুল করতে চাই না। মার্চ-এপ্রিলে নিউইয়র্কের অনেক মানুষ আমরা হারিয়েছি। সে সব দু:সহ দিনগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে-এমন কোন কিছুকেই আমরা মেনে নিতে পারবো না। 

সিটির ব্যস্ততম প্রতিটি রেস্টুরেন্টের সামনের রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে চেয়ার-টেবিল বসানো হয়েছে। বারের বাইরেও একই অবস্থায় মানুষেরা পুরনো আড্ডায় মেতে উঠে মধ্যাহ্নভোজ/নৈশভোজ করছেন। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এবং কানেকটিকাট স্টেটে বাসার বাইরে গেলেই মাস্ক পরতে হয় সকলকে। দোকানে ঢুকতে দেয়া হয় না মাস্ক ছাড়া। অফিসেও একই অবস্থা। অর্থাৎ সবকিছু পাল্টে গেছে করোনা আতংকে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর