২৯ মার্চ, ২০১৭ ১১:৪৮

রূপালী ব্যাংকের সব সেবা অনলাইনের আওতাভুক্ত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

রূপালী ব্যাংকের সব সেবা অনলাইনের আওতাভুক্ত

রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবার আগে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনে এসেছে রূপালী ব্যাংক। গত ২৭ মার্চ শেষ শাখাটি কোর ব্যাংকিং সলুশনের (সিবিএস) আওতায় আনার মাধ্যমে এই মাইলফলক স্থাপন করে ব্যাংকটি। গতকাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বোর্ড সদস্য ও সংবাদকর্মীদের নিয়ে কেক কেটে এই অর্জন উদযাপন করেছেন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

এই অর্জনের ফলে ৫৬৩টি শাখার মাধ্যমে সারা দেশের গ্রাহকরা রিয়েল টাইম ব্যাংকিংয়ের সুবিধা পাচ্ছেন। রূপালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টধারীরা দেশের যেকোনো প্রান্তের শাখায় বসেই লেনদেন করতে পারছেন। আর প্রতিটি শাখার সারাদিনের হিসাব সন্ধ্যার মধ্যে চলে আসছে প্রধান কার্যালয়ে, যা নিশ্চিত করছে ব্যাংকটির কার্যক্রমের শতভাগ স্বচ্ছতা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আতাউর রহমান প্রধানের কঠোর নির্দেশনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শতভাগ অটোমেশনে এসেছে ব্যাংকটি। গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নিয়েই অতি দ্রুততার সঙ্গে সবগুলো শাখা অটোমেশনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন আতাউর রহমান। শাখাগুলো কোর ব্যাংকিং সুল্যশনের আওতায় আনতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নানা অসঙ্গতি। দেখা যায়, পূর্বে অনেক শাখা লোকসানে থাকার পরও তথ্য গোপন করে মুনাফা দেখিয়ে আসছিল এতদিন। 

লোকসানে থাকার পরও অসত্য মুনাফা দেখাতে গিয়ে একদিকে যেমন সাড়ে ৪২ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করতে হয়েছে, তেমনি মুনাফার একটি অংশ সরকারকে দিতে হয়েছে। এতে ব্যাংকটি থেকে বিপুল অর্থ বেরিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ভিত আরও দুর্বল করে দিয়েছে। 

জানা গেছে, এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে ব্যাংকটিকে বের করে আনতেই পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন আতাউর রহমান। তার নির্দেশে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়ে মাত্র চার মাসে ৫০৬টি শাখা সিবিএস এর আওতায় আসে। বাকি ৫৭টি শাখা অনলাইনের আওতায় আসে গত সোমবারের মধ্যে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় লেগেছে লোকাল শাখা অনলাইনের আওতায় আনতে। কারণ ব্যাংকটির প্রায় ৮০ ভাগ ঋণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এই শাখা থেকে। সবগুলো শাখা সিবিএস এর আওতায় আসার পরে প্রকৃত আর্থিক চিত্র ফুটে ওঠে। এতে সাময়িক চাপ সৃষ্টি হলেও দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে সরকারি খাতের এই বাণিজ্যিক ব্যাংকটি। 

প্রকৃত আর্থিক চিত্র হাতে আসার পর ব্যাংকটিকে দাঁড় করানোর পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধান নির্বাহী। পূর্বের পুঞ্জিভূত ২৪৭ কোটি টাকা লোকসান ইতোমধ্যেই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে রূপালী। আদায় হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ ৬০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। অব্যাহত লোকসানের দায়ে একসময় বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনায় থাকা সরকারি ব্যাংকটি আগামি জুনের মধ্যেই বড় অংকের মুনাফা উপহার দিতে যাচ্ছে সরকারকে। 

সিইও আতাউর রহমান প্রধানের নেতৃত্বে এখন ব্যাংকটির শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আর এমডির ভাষ্য অনুযায়ী, এই কাজে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন মনজুর হোসেনের নের্তৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ। বোর্ড সদস্যদের সততা ও দক্ষতায় গর্বিত আতাউর রহমান প্রধানের বক্তব্য, এত ভালো বোর্ডের অধীনে এর আগে তার কাজ করার সৌভাগ্য হয়নি। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাজে সন্তুষ্ট চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন প্রকাশ্যেই প্রশংসা করেছেন আতাউর রহমানের। বলেছেন, এমডির ব্যাপক সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। অনেকে বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এই ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। 

এদিকে, রূপালী ব্যাংকের এই অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা। তার আশা, রূপালী ব্যাংকের দেখানো পথে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোও দ্রুত অটোমেশন সম্পন্ন করবে। 

স্বচ্ছতার স্বার্থে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোকেও রূপালী ব্যাংকের পথ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ব্যাংকটির সিনিয়র ম্যানেজমেন্টর সদিচ্ছার কারণেই পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/২৯ মার্চ, ২০১৭/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর