২১ জুন, ২০১৮ ১৮:০৯

মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক

মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বহুমাত্রিক ব্যবসায়িক গ্রুপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ইউএস-বাংলা। ইউএস-বাংলার মিশন কিংবা ভিশন বলতে অধিক জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। 

ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউএস-বাংলা এসেটস্, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউএসবি এক্সপ্রেস, ইউএস-বাংলা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউএস-বাংলা ফুটওয়্যার, ইউএস-বাংলা হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউএস-বাংলা অটোমোবাইলস্, ইউএস-বাংলা ফুডস্, ইউএস-বাংলা ফ্যাশনসসহ আরও নানাবিধ প্রতিষ্ঠান।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছে নয় বছর পূর্বে। কিন্তু সময়ের হিসেবে ব্যবসার পরিধি বেড়ে চলেছে জ্যামিতিক হারে, যা বাংলাদেশে অনেকটাই বিরল। পৃথিবীর ঘন বসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। 

ইউএস-বাংলা গ্রুপ ঢাকার অতি সন্নিকটে নতুন ঢাকা খ্যাত পূর্বাচলে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২০ মিনিট দূরত্বে গড়ে তুলেছে পূর্বাচল আমেরিকান সিটি। 

গত ১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের বিমান পরিবহন শিল্পে একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক।

বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল ৭৬ আসন বিশিষ্ট দু’টি কানাডার বোম্বারডিয়ার তৈরী ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিং, ইন হাউজ ট্রেনিং সুবিধা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, যা যাত্রী সাধারনের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। 

এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল চালু বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করে সারা দেশের জনগণকে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে সূদৃঢ়। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার সাফল্যের পর ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ১৫ মে ২০১৬ তারিখে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে কলকাতা, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। 

বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজিন 'ব্লু স্কাই'। বর্তমানে সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৩০০টির অধিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। চার বছরে প্রায় ৪০ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, যা বাংলাদেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। ৯৮.৭% অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড নিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে মোট যাত্রী সংখ্যার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা।

যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতি স্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে গত তিন বছর যাবত সেরা এয়ারলাইন্স এর মুকুট অর্জন করতে পেরেছে। ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে অন-লাইন বুকিং সুবিধা। রয়েছে হোম ডেলিভারী সুবিধাও। সারাদেশে নিজস্ব ৩০টি সেলস্ অফিস। এছাড়া কাঠমান্ডু, কলকাতা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দোহা, গুয়াংজু, কানাডা, নিউইয়র্ক এ নিজস্ব সেলস্ অফিস। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে 'স্কাইস্টার' প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকেট ক্রয়েই সুবিধা পাবে না বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের ডিসকাউন্ট সুবিধাও পেয়ে থাকে। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদের বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। 

উল্লেখযোগ্য, সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক রুটের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য রয়েছে পিক-ড্রপ সার্ভিস, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরনের পর ১৫ মিনিটে ল্যাগেজ ডেলিভারী, ওয়েজ আর্নার্সদের জন্য বিমানবন্দরে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০% মূল্যছাড়, সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তা ও গলফারদের রয়েছে ১০% মূল্যছাড়সহ আরো নানাবিধ যাত্রীসুবিধা। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে।
 
ভাইব্রেন্ট ব্র্যান্ড নিয়ে ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা ফুটওয়্যার লিমিটেড আত্মপ্রকাশ করেছে। ফ্যাশন সচেতন গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী দেশের মানুষের আধুনিক ও মননশীল চিন্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই ভাইব্রেন্ট কাজ করছে। ভাইব্রেন্ট প্রডাক্টের মান ও দামের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদান করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

দেশে কিংবা বিদেশে আপনার পণ্য পৌছাতে দ্রুততার সাথে ট্র্যাকিং পদ্ধতি ব্যবহার করে পণ্যের অবস্থান সুনিশ্চিত করে প্রথমদিন থেকেই আধুনিক সেবা দিচ্ছে ইউএসবি এক্সপ্রেস। ইউএসবি এক্সপ্রেসের সেবার অন্যতম লক্ষ্য তিনটি যথাক্রমে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছে স্থানান্তর, কাস্টমারদেরে কাছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পণ্য এবং বিভিন্ন কাস্টমারদের পণ্য অন্যান্য কাস্টমারদের কাছে স্থানান্তর। 

ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। মেধা, ছাত্রী, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, মুক্তিযোদ্ধা ও খেলোয়াড় কোটায় ভর্তিচ্ছুরা সর্বোচ্চ ১০০% পর্যন্ত স্কলারশিপে ভর্তি হতে পারছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেও পাচ্ছেন বিশেষ ছাড়। এছাড়া কর্পোরেট ও গ্রুপভিত্তিক ভর্তি হলে রয়েছে অতিরিক্ত ওয়েভার। 

গ্রিন ইউনিভার্সিটির যাত্রা ২০০৩ সালে। বর্তমানে মিরপুর শেওড়াপাড়ায় মোট তিনটি ভবনে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা দ্রুত পূর্বাচল আমেরিকান সিটিস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে যাবে। সেখানেই সুবিশাল জায়গা আর সবুজে আচ্ছাদিত পরিবেশে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখা করবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।

বর্তমানে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে রয়েছে ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। আগামী তিন মাসের মধ্যে পূর্বাচলে হসপিটালের অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ইউএস-বাংলা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পূর্ণ রফতানিমুখী একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। চলতি বছর শেষ প্রান্তিকে ইউএস-বাংলা হাইটেক আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। যেখানে নানাধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশীয় চাহিদা পূরণের পর বিদেশেও রফতানির পরিকল্পনা আছে।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সর্বোচ্চ কাস্টমার সন্তুষ্টি, কর্পোরেট সংস্কৃতি মেনে চলা, সর্বোপরি একটি সুনিয়ন্ত্রিত টিম গঠন করা, যা দিয়ে আর্থ ও সামাজিকভাবে এগিয়ে চলেছে। 

ইউএস-বাংলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলি কোয়ালিটি সিস্টেমের ক্ষেত্রে আইএসও ৯০০১:২০০৮ দ্বারা সার্টিফাইড।

বিডি প্রতিদিন/২১ জুন ২০১৮/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর