বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভর্তুকির ২ হাজার টন সার কালোবাজারে বিক্রি

বরগুনায় বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি করা ভর্তুকির প্রায় ২ হাজার ২০০ মেট্রিকটন নন-ইউরিয়া সার কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমতলী, তালতলী ও পাথরঘাটার ১৩ জন বিসিআইসি ডিলার এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, এসব সার মাঠপর্যায়ে বিক্রি না করে পরিবেশকরা যশোরের নোয়াপাড়ায় আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করে দেন। বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, গত ২১ ও ২৯ আগস্ট বরগুনার চাহিদার বিপরীতে ২ হাজার ২০০ মেট্রিকটন নন-ইউরিয়া সার আমদানি করা হয়। ভর্তুকির এসব সার আমতলী, তালতলী উপজেলার ১০ এবং পাথরঘাটার তিনজন পরিবেশককে টিএসপি টনপ্রতি ২০ হাজার, এমওপি ১৩ হাজার ও ডিএপি ২৫ হাজার টাকা দরে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সার এলাকায় না এনে নোয়াপাড়ায় আমদানীকারকদের কাছে বিক্রি করে দেন তারা। নোয়াপাড়ার ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, ২০১৩ সালেও বরগুনার কয়েকজন ডিলারের কাছ থেকে একইভাবে তারা নন-ইউরিয়া সারের চালান কিনে রাখেন। জানা যায়, মৌসুমভিত্তিক ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে উপজেলাভিত্তিক তালিকায় গত আগস্টে আমতলী ও তালতলী উপজেলায় নন-ইউরিয়া বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৬০ মেট্রিকটন। অথচ একই মাসে তদবির করে আমতলী ও তালতলীর ১০ জন ডিলার প্রত্যেকে ১৮৩ মেট্রিকটন করে ১ হাজার ৮৩০ এবং পাথরঘাটার তিনজন পরিবেশক ৩৭০ মেট্রিকটন ভর্তুকি সারের বিশেষ বরাদ্দ নেন। পরিবেশকরা এসব সার উত্তোলন না করেই আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করে দেন। বরগুনার একাধিক বিসিআইসির পরিবেশক নাম গোপন রাখার শর্তে অভিযোগ করেন, জুলাই ও আগস্টে সদর উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত টিএসপি সারের জন্য টাকা জমা দিয়েও তারা সার পাচ্ছেন না। বিশেষ বরাদ্দপ্রাপ্ত তালতলীর পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের মেসার্স রুমা এন্টারপ্রাইজের মালিক নান্নু খান বলেন, ‘জেলায় নন-ইউরিয়া সারের সবচেয়ে বেশি চাহিদা আমতলী ও তালতলীতে। সে অনুযায়ী আমরা অতিরিক্ত বরাদ্দ এনেছি এবং স্থানীয় চাষীদের মধ্যে বিক্রি করেছি।’ আরেক পরিবেশক রাফা-মণি এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুমা আক্তার বলেন, ‘বিশেষ বরাদ্দের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার স্বামী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী বলতে পারবেন।’
ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের সচিব জাকির হোসেন সারের ব্যবসা দেখাশোনা করেন। তিনি ভালো বলতে পারবেন।’ সচিব জাকির হোসেনের বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক অশোক কুমার হালদার বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন আমি কর্মস্থলে ছিলাম না। এসে বিষয়টি শুনে খোঁজ নিয়েছি। তবে ওইসব উপজেলা সার মনিটরিং কমিটি আমাকে বলেছে যথাযথভাবে সার আনা ও বিতরণ করা হয়েছে। তারপরও আমি সরেজমিন বিষয়টি অনুসন্ধান করবো।’

 

সর্বশেষ খবর