শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় বেকার ৩৩ লাখ শ্রমিক

১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

সিলেটের ছয়টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে কয়লা আমদানি। ভারতের সংশ্লিষ্ট শুল্ক স্টেশনগুলোতে ওয়েট ব্রিজ (ওজন পরিমাপক যন্ত্র) স্থাপন না হওয়ায় কয়লা আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সাত মাসে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে ১০০ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা। কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ইট পোড়ানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ভাটাগুলোতে। আমদানি শুরু না হলে ভাটা মালিকরা সর্বস্বান্ত হওয়ার পাশাপাশি কয়লার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সারা দেশের প্রায় ৩৩ লাখ শ্রমিক বেকার হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়লা আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেটের তামাবিল, সুতারকান্দি, ভোলাগঞ্জ, বড়ছড়া, চারগাঁও ও বাগলি স্টেশন দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে কয়লা আমদানি করা হয়। প্রতি বছর এসব স্টেশন দিয়ে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আসে। ইটভাটা ছাড়া চা বাগান ও বিদ্যুৎকেন্দে এই কয়লা ব্যবহৃত হয়। সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ জানান, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কয়লা আমদানি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। এরমধ্যে আমদানি শুরু না হলে সর্বস্বান্ত হবেন ইটভাটা মালিকরা। তিনি জানান, একেক ভাটা মালিক ৪০-৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কয়লার অভাবে তারা ইট পোড়াতে পারছেন না। জানা গেছে, গত মে মাসে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পরিবেশবাদী সংগঠন 'ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল' অপরিকল্পিতভাবে কয়লা উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে উচ্চ আদালতে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ মে থেকে সিলেটের সব শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ৭ অক্টোবর ভারতের উচ্চ আদালত শর্তসাপেক্ষে সাময়িক কয়লা রফতানির অনুমতি দেন। বেধে দেওয়া শর্তের মধ্যে ছিল প্রতিটি শুল্ক স্টেশনে ওয়েট ব্রিজের মাধ্যমে কয়লা পরিমাপ করা। কিন্তু ভারতের শুল্ক স্টেশনগুলোতে ওয়েট ব্রিজ না থাকায় কয়লা রফতানি শুরু করা যায়নি। এ অবস্থায় ওয়েট ব্রিজ স্থাপনের আগ পর্যন্ত পুরাতন নিয়মে কয়লা রফতানির অনুমতি চেয়ে ভারতীয় রফতানিকারকরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

শরীয়তপুরে ৩৫ ইটভাটা বন্ধের পথে : শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, কয়লার অভাবে শরীয়তপুরের ৩৫টি ভাটায় ইট পোড়ানো বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন এসব ভাটার প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শ্রমিক। জানা যায়, আদালতের নির্দেশে ২০১১-২০১২ অর্থ বছর থেকে এ অঞ্চলের ভাটা মালিকরা সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে ঝিকঝাক পদ্ধতিতে ইট পোড়ানো শুরু করেন। এ পদ্ধতিতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় কয়লা। কিন্তু ভারত থেকে প্রায় সাত মাস ধরে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর