বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ডাক্তার-নার্সরা চলেন খেয়ালখুশি মতো

ডাক্তার-নার্সরা চলেন খেয়ালখুশি মতো

নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সসহ হাসপাতালের বেশিরভাগ কর্মকর্তাই চলেন নিজের খেয়ালখুশি মত। কার্যক্রম দেখে মনে হয়, কেবল সরকারি বেতন তোলার তাগিদেই তারা প্রতিদিন হাসপাতালে হাজির হন। ডাক্তার ওয়ার্ড পরিদর্শন শেষে চলে যান। তারপর নার্সের প্রক্সি দেন নীলফামারী নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ফলে প্রতিনিয়িত বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের  ভর্তিরত রোগীদের। জেলা সদরের ১৫টি ইউনিয়নের  হতদরিদ্র মানুষগুলো প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়ছেন। ডাক্তার-নার্সদের পর্যাপ্ত সেবা পান না তারা। সরকারি ওষুধ তো নয়ই, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জরুরি স্যালাইনও আনতে হয় বাইরে থেকে। হাসপাতালের বহি:বিভাগের চিত্রও একই। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আঁতাত করে ডাক্তাররা বিভিন্ন কেম্পানির ওষুধ লিখে দেওয়ার কারণে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। ফলে হাসপাতালের জন্য সরকারিভাবে যে পরিমাণ ওষুধ বারদ্দ দেওয়া হয়, তার বড় অংশই চুরি করে বাইরে বিক্রি করা হয়। রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা সেবার নামে নানাভাবে প্রতারণা করা হয়। অপরদিকে, অস্ত্রোপচারের সব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান থাকার পরও সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। অনেক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকার পরও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অনেকটা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে হয়। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের ডাক্তার সংকট থাকার পরও ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতালটিতে সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি, জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি, জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু, জুনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটিসহ ১৩ জন ডাক্তারের মধ্যে   আটটি পদ শূন্য রয়েছে। বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তারাও সময়মতো হাসপাতালে আসেন না। হাসপাতালের ইনডোরে পুরুষ, মহিলা, শিশু ও গাইনি ওয়ার্ডে প্রায় দিন গড়ে দেড়শ’ রোগী ভর্তি থাকে। আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী। অ্যানেসথেসিয়া ও মেডিসিন কনসালটেন্ট না থাকায় গর্ভবতী মায়েদের সিজার ও অন্যান্য রোগীদের অস্ত্রোপচার  বন্ধ রয়েছে। নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেডিকেল অফিসার ছাড়াও কনসালটেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় রোগীরা কিছু সমস্যার মুখে পড়ছেন। অন্য অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর