সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

লক্ষ্মীপুরের দুর্গম চরে দুর্বিষহ জীবন

* অচল শিক্ষা ব্যবস্থা * নেই স্বাস্থ্য সেবা * অনুন্নত রাস্তাঘাট

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার দুর্গম এলাকা চর আবদুল্লাহ ইউনিয়ন। মেঘনা নদীবেষ্টিত এ ইউনিয়নের প্রায় ২৬ হাজার মানুষ পার করছেন দুর্বিষহ জীবন। ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দিন কাটে। নেই স্বাস্থ্য সেবা, অচল শিক্ষা ব্যবস্থা। অনুন্নত রাস্তাঘাট আর চলাচলের কোনো যানবাহন না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হন তারা। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী ও কৃষি নির্ভরশীল হয়ে জীবন যুদ্ধে লড়ছেন। জেলার রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার থেকে মেঘনা পাড়ি দিয়ে ট্রলার কিংবা নৌকায় চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি। শুরুতেই আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পার হয়ে চেয়ারম্যান বাজার খালের ওপর কাঠের সাঁকো। ওই ইউনিয়নে প্রবেশের প্রধান এই সড়কের কাঠের সাঁকোটির অবস্থা খুব নাজুক। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শত শত শিশু, কিশোর, বয়োবৃদ্ধ। ওই বাজারের পাশে রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। এ ক্যাম্পের সদস্যরা অপরাধীদের সঙ্গে মিলে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবাদ করলেই ডাকাতি কিংবা অস্ত্র মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পুরো ইউনিয়নে একটি মাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষক স্বল্পতাসহ নানা সংকটে সেখানেও অচলাবস্থা। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নতুন প্রজম্ম। ইউনিয়নটিতে নেই কোনো আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এলাকাবাসী জানান, গর্ভবতী মায়েদের প্রসব বেদনা উঠলে তাদের নিয়ে বিপদে পড়েন তারা। কোথায় নেবেন, কিভাবে নেবেন এ নিয়ে চিন্তার শেষ থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে সেবা না পেয়ে হয় মৃত্যু, না হয় যন্ত্রণায় কাতরান প্রসূতিরা। একই অবস্থা অন্য রোগীদেরও। ইউনিয়নে রয়েছে দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্প। যেখানে আশ্রয় পেয়েছেন উপকূলের ১৮০টি পরিবার। এ ছাড়া ছোট ছোট টুপরী ঘরে বসবাস করছেন মানুষ। এদের কয়েকজন জানান, সব সময় তাদের জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকতে হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, এখানকার মানুষ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ইউনিয়নের চারদিকে পাঁচটি কাঠের সাঁকো। সেগুলো এখন নড়বড়ে। আশঙ্কা রয়েছে যেকোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার। বর্ষাকালে রাস্তাঘাট হয়ে যায় চলাচলের অনুপযোগী। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকি তো রয়েছেই। স্থানীয় সাংসদ আবদুলাহ আল মামুন জানান, সাঁকোগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও সেতু নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর