সোমবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
অনির্দিষ্টকালের অবরোধ

বাগেরহাটসহ দক্ষিণাঞ্চলে মাছের বাজারে ধ্স

বাগেরহাটসহ দক্ষিণাঞ্চলে মাছের বাজারে ধ্স

বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের কারনে বাগেরহাটসহ দক্ষিণাঞ্চলের  মাছের বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ফলে পাইকারী সাদা মাছের আড়ৎ এ মাছের আমদানি স্বাভাবিকহার কমে যাওয়ায় বেচাকেনা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। প্রতিদিন এই দুটি মৎস্য আড়তে অন্তত দুইশ টন মাছ কেনাবেচা হয়ে থাকে। আর এখান থেকে এই মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। অবরোধের ফলে পরিবহণ সংকটের কারনে তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে এই মৎস্য শিল্পের সঙ্গে জড়িত চাষী ও ব্যবসায়ীদের আর্থিকক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। অবিলম্বে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করতে বিএনপির ডাকা অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার দুপুরে দক্ষিণাঞ্চলের সাদা মাছের সবচেয়ে বড় বিক্রয় কেন্দ্র বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর এবং ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী ও চাষীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই আড়ৎ থেকে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মোকামে মাছ রপ্তানী হয়ে থাকে। কিন্তু কয়েক দিনের টানা অবরোধের কারনে এই মৎস্য সেক্টরে ধ্বস নেমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা।

বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর মৎস্য আড়তে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকা মাছ বেচাকেনা হয়ে থাকে।  বিএনপি’র অবরোধ শুরু হওয়ার পর তা ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে বলে জানান ব্যবসায়ী নেতারা। অবরোধের কারনে মাছের নায্যমূল্য না পওয়ার আশংকায় অনেক চাষী তার খামার থেকে মৎস্য শিকার বন্ধ রেখেছেন। এই কারনে আড়তে মাছের আমদানি অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে। অবরোধের কারনে মানুষের ভেতরে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবাই এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।

এদিকে সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ির দাম বাজারে অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ায় বাগেরহাটের চিংড়ি চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত কমেছে। একদিকে বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম কমে গেছে অন্যদিকে চাষীদের ডিপো মালিকদের কাছে চিংড়ি বাকিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে এই চিংড়ির ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার চাষী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

বর্তমানে বড় রুই মাছের মন ১৫-১৬ হাজার টাকা, মাঝারী ৭-৮ হাজার টাকা ও ছোট ৪- থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  বর্তমানে কমপক্ষে প্রতি মনে ২-৩ হাজার টাকা কম বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

চলতি মৌসুমে বাগদা চিংড়ির বাজার দর (বর্তমানে ১৫ গ্রেড ৮০০ টাকা, যা ছিল ১২০০ টাকা), ২০ গ্রেড ৭০০ টাকা যা আগে ছিল ১০০০ টাকা, ৩০ গ্রেড ৬০০ টাকা যা আগে ছিল ৮৫০ টাকা, ৪৪ গ্রেড ৪০০ টাকা যা আগে ছিল ৬০০ টাকা এবং ৬৬ গ্রেড ২০০ টাকা যা আগে ছিল ৪৫০ টাকা)।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যদিকে পরিবহণ নিয়মিত না চলাচল করায় এখানে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসতে পারছেন না। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাদা মাছ বাজারজাত হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের এই আড়ৎ দুটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।  সাদামাছ চাষি সালাম ও আজগর বলেন, ‘বর্তমানে ঘের সেচ দিয়ে মাছ ধারার সময়। আমরা এখন মাছ কম ধরছি। মাছের দাম কমে গেছে। অবরোধের কারনে মাছ নিয়ে মার্কেটে আসতে ভয় লাগে। নিরাপত্তা নেই। যদি কেউ মাছের গাড়ী ভাংচুর করে এই ভয়তে মাছ কম নিয়ে আসছি।

বিডি-প্রতিদিন/ ১২ জানুয়ারি, ২০১৫/ নাবিল
 

সর্বশেষ খবর