রবিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

কক্সবাজারে ১০ হাজার একর ফসলি জমিতে তামাক চাষ

নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ কমছে আবাদি জমি

কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা, সদরের ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারী ও চকরিয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে এ বছর পরিবেশ বিধ্বংসী তামাক চাষ করা হয়েছে। শত শত একর ফসলি জমিতে ধানের বদলে চাষিরা উৎপাদন করছে পরিবেশ বিধ্বংসী ক্ষতিকর তামাক। কৃষি সম্ভাবনাময় এসব এলাকায় তামাক কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী তৎপরতায় কৃষিদ্রব্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। ফলে সরকারের কৃষি উন্নয়নের কোনো উদ্যোগই সফলতা পাচ্ছে না। কৃষি বিভাগ থেকে জেলায় প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে জানানো হলেও বাস্তবে দেখা গেছে তামাক চাষের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় এ বছর আরো বেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয়ভাবে চাষ তদারকে নিয়োজিত ট্যোবাকো কোম্পানিগুলোর লোভনীয় ফাঁদে পড়ে স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবছর তামাক চাষের ঝুকে পড়ছেন। এ অবস্থার ফলে জেলায় কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। ফলে, চকরিয়া, রামু উপজেলা, ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারীসহ পাশর্্ববর্তী এলাকায় রবি শস্যের ফলন প্রতিবছরই মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দীর্ঘ বছর ধরে সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া ঢালারমুখ, পূর্ব গজালিয়াসহ নিকটবর্তী খালের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশসহ ক্যাম্পের চর এলাকাজুড়ে ফসলি জমিতে ধান, মরিচ, বেগুনসহ মৌসুমি শাক-সবজি চাষের পরিবর্তে পরিবেশের ক্ষতিকারক তামাক চাষ হচ্ছে। এদিকে, রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের বড়বিল, চরপাড়া, ধুমছাকাটা, ঠান্ডাঝিরি, নয়াপাড়া, বৌ-ঘাট উপরের খিল এবং নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের আলিক্ষ্যং ও বরইশরসহ পাহাড়ি এলাকাজুড়ে শত শত ফসলী জমি গ্রাস করে তামাক চাষ হচ্ছে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি বর্গাচাষী সমিতির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন পুতু বলেন, তামাক চাষের কারণে আবাদি জমির পরিমাণ কমতে থাকায় এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি খাদ্য নিরাপত্তা। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে খাদ্য-উদ্বৃত্ত এ উপজেলায় এক সময় চরম খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দেবে। এ জন্য তামাক চাষ বন্ধে প্রশাসনকে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, কৃষকরা মূলত বেশি টাকা আয় করার জন্য ট্যোবাকো কোম্পানির প্রলোভনে পড়ে তামাক চাষে জড়িয়ে পড়ছে। তারপরও তামাক চাষ বন্ধে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. শাহ-ই-আলম বলেন, চকরিয়া উপজেলার প্রত্যেক রেঞ্জ ও বনবিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তামাক চাষ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য। যাতে বনাঞ্চলের কোনো ধররে কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।

 

 

সর্বশেষ খবর