শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

নানা সমস্যায় নওগাঁ বিসিক এক বছরে ১২ প্রতিষ্ঠান বন্ধ

নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী। রয়েছে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার অভাব। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, গ্যাস-সুবিধা ও ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় অসম প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেন না তারা। ফলে গত এক বছরে বন্ধ হয়ে গেছে বিসিক এলাকার ১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। আংশিক বন্ধ রয়েছে আরো তিনটি।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে নওগাঁয় প্রতিষ্ঠিত হয় বিসিক শিল্পনগরী। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছরে সেখানে গড়ে উঠে অর্ধশতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। শুরু থেকেই গ্যাসের পরিবর্তে বিদ্যুৎ বা অন্যান্য জ্বালানি দিয়ে চালানো হচ্ছে উৎপাদন কার্যক্রম। বর্তমানের দেশের প্রায় সব এলাকায় গ্যাস-সুবিধা থাকলেও নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরীতে মেলেনি গ্যাস। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আবার নিয়ম অনুযায়ী বিসিক নগরীর কোনো ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাইলে তাকে প্রতিষ্ঠানের ওই জায়গা মর্ডগেজ রেখে ঋণ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু বিসিক শিল্পনগরীর নিয়ম অনুযায়ী উদ্যোক্তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওই যায়গা মর্ডগেজ রাখার ক্ষমতা রাখেন না। কোনো কোনো ব্যবসায়ী নিয়ম ভেঙে বিসিক নগরীর ভেতর পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা আবদুল বারী জানান, ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঋণপ্রাপ্তির জটিলতা। নিজস্ব মূলধন দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন। প্রায় সব ব্যবসায়ী ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিসিকের নিয়মানুযায়ী এই জায়গা ব্যাংকের কাছে মর্ডগেজ দেওয়া যাবে না। তাতে করে ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না। আর গ্যাস সমস্যা এখন মহাসমস্যায় পরিণত হয়েছে। আরেক ব্যবসায়ী মশিউর রহমান জানান, শুধু গ্যাসের কারণে তার ওয়ার্কশপে পণ্য তৈরির খরচ পড়ছে প্রায় দ্বিগুণ। শিল্পনগরীর পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে পুরো এলাকায় নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো ঠিকমত পরিষ্কার না করায় বর্ষায় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। শিল্পনগরীর আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীও প্রায় একই অভিযোগ করেন। পরিবার নিয়ে থাকার কথা স্বীকার করে নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'আমি বিষয়টি জেনে অভিযুক্তদের চিঠি দিয়েছি। এছাড়া ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে জটিলতা তা আসলেই বড় সমস্যা। এটি নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।' তিনি আরও জানান, সমস্যাগুলো নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে ধর্ণা দিয়েও লাভ হয়নি। আর শিল্পনগরীতে গ্যাস-সুবিধার জন্য ওপর মহলে অনেকবার লিখেছি, এখনো লিখছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর