শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

হুমকির মুখে খুলনার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ

পানির চাপে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপ, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটার কয়েকশ' কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। কালবৈশাখীর আঘাত ও পানির প্রবল চাপে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে এখানকার শতাধিক গ্রামের মানুষের। এরই মধ্যে কয়রা উপজেলার দক্ষিণবেধকাশি ইউনিয়নের খাসিটানাসহ কয়েকটি এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছে স্থানীয়রা। জানা গেছে, কয়রা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৩ ও ১৪ নম্বর পোল্ডারে কমপক্ষে ২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো হলো- মহারাজপুর ইউনিয়নের লোকা, পূর্ব মঠবাড়ি, দশাহালিয়া, কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা, গুড়িয়াবাড়ি স্লুইস গেট এলাকা, কয়রা লঞ্চঘাট, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের বানিয়াখালি, হড্ডা খেয়াঘাট এলাকা, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে গাতিরঘেরি, কাশিরহাট ও গাববুনিয়া এলাকা এবং দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চরামুখা, মাটিয়াভাঙ্গা, জোড়শিং ও ছোট আংটিহারা এলাকা। এর মধ্যে ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারের লোকা ও পূর্ব মঠবাড়ি এলাকায় সাড়ে তিন কিলেমিটার এবং ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে ৪ নম্বর কয়রা লঞ্চঘাট, গুড়িয়াবাড়ি স্লুইস গেটের পূর্ব পাশে, চরামুখা, মাটিয়াভাঙ্গা ও ছোট আংটিহারা এলাকার সাত কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুকিপূর্ণ। কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বেল্টু জানান, বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে প্রায় ৩৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কয়রা উপজেলার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক স্থানে বাঁধে নতুন করে ধস নেমেছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নে ভদ্রা নদীর ভাঙনে পাউবোর বাঁধ ও সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। পাউবোর ডুমুরিয়া উপজেলার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবপ্রতিম হাওলাদার বলেন, ডুমুরিয়ার ২৯ নম্বর পোল্ডারের বারোআড়িয়া বাজার ও চাঁদঘর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফান্ডের অভাবে যথাসময়ে কাজ করা যাচ্ছে না। এছাড়া দাকোপের ৩২ পোল্ডারের কালিবাড়ি, কামারখোলা, কালাবগি, সুতারখালি ও জেলেখালি পয়েন্টে এবং ৩৩ পোল্ডারের বানিশান্তা, রামনগর ও বাজুয়া পয়েন্টে বাঁধ ঝুকিপূর্ণ। জানা গেছে, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৩২ ও ৩৩ পোল্ডারে বাঁধ সংস্কারে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় গত দুই বছরে বাঁধ সংস্কারে পাউবো আলাদা করে কাজ করেনি। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকও সংস্কার কাজে হাত দেয়নি। ফলে দ্বৈতস্বত্বায় এখানে বাঁধ সংস্কারে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাকোপ উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী দাকোপ ফিরোজ হোসেন বলেন, আইলার পর দোকাপের বেড়িবাঁধে সংস্কার করা হয়নি। এই সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। ফলে দাকোপের বেড়িবাঁধের একটি বড় অংশই এখন ঝুঁকির মুখে।

সর্বশেষ খবর