মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভুলে ভরা ভূমি জরিপের খেসারত গুনছে কৃষক

ট্রাইব্যুনালে মামলার পাহাড়

মাঠ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও চরম অবহেলায় ভুলে ভরা ভূমি জরিপের খেসারত গুনতে হচ্ছে জমির মালিকদের। মামলার পাহাড় জমেছে ময়মনসিংহ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে। ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এ মামলার সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৩১ হাজার ৩৭২ টিতে। প্রায় দু বছর আগে নিয়মিত বিচারক মাসুম পারভেজ বদলি হয়ে যাওয়ার পর এ ট্রাইব্যুনাল চলছে ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিয়ে। জানা যায়, বিগত সরকারসমূহের সময়ে করা বিআরএস জরিপের পরচা আর ম্যাপে হাজার হাজার ভুল। কারো জমি পরচায় আছে তো ম্যাপে নেই। ম্যাপে আছে তো পর্চা নেই। আবার ম্যাপে থাকলেও শত বছর ধরে যে চৌহদ্দিতে মালিক সম্পত্তি ভোগ-দখল করে আসছেন সেভাবে নেই। ইতোমধ্যেই সংশোধনের কয়েকটি ধাপ নীরবে চলে গেছে। ভূমি জরিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে নূ্যনতম কোনো প্রচার নেই। ফলে গ্রাম্য টাউট-বাটপাড় আর মাঠ পর্যায়ের জরিপ কর্মকর্তাদের পোয়াবারো অবস্থা। সূত্র মতে, বিআরএস রেকর্ডে ব্যাপক ভুল থাকায় সরকার নতুন করে সারা দেশের জন্য ১২টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এসব ট্রাইব্যুনালে যুগ্ম জেলা জজের পদমর্যাদার একজন বিচারকসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুর জেলায় বিএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য ময়মনসিংহ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ময়মনসিংহ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী গোলাম মহিউদ্দিন জানান, ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট এ ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মাসুম পারভেজ ঢাকা মহানগর দশম আদালতে বদলি হয়ে যান। এরপর থেকেই ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে করে বিচার কাজে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি জানান, এ ট্রাইব্যুনালে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৩৭২টি মামলা রয়েছে। তবে এখন আর নতুন করে কোনো মামলা নেওয়া হচ্ছে না। চূড়ান্তভাবে গেজেট প্রকাশিত হওয়ায় মামলা নেওয়ার আর সুযোগ নেই। নতুন করে মামলা দেওয়ার সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপুল সংখ্যক জমির মালিক চরম বিপাকে পড়েছেন। ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান ছানা বলেন, এখন আর ট্রাইব্যুনালে মামলা নেওয়া হচ্ছে না। বিজ্ঞ আদালত ইতোমধ্যেই নোটিস বোর্ডে নোটিস ঝুলিয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো মামলা গ্রহণ করবে না। অথচ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত মামলার মেয়াদ শেষের তারিখ কিংবা কবে থেকেই মামলা নেওয়া হয়েছে এ তারিখ জানতেন না। প্রতিদিন এখনো অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত মামলা করতে আসেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল মামলা না নেওয়ায় আমরা গ্রহণ করতে পারছি না।

সর্বশেষ খবর