২৫ ও ২৬ এপ্রিল দুদফা ভূমিকম্পে সিরাজগঞ্জে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকছে না। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলায় স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করতে না পেরে বাধ্য হয়ে খোলা আকাশ বা গাছতলায় পরীক্ষা নিচ্ছেন। শিক্ষক ও অভিভাবকরা দ্রুত বিদ্যালয়গুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় ছাত্র-ছাত্রীরা আতঙ্কে বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক অফিস সূত্রে জানা যায়, দুদফা ভূমিকম্পে সদর উপজেলার মালসাপাড়া, স্বরসতী, ভুরভুরিয়া, ভাটপিয়ারী মডেল ও উত্তর সয়াধানগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর মেঝে, ছাদ ও কলামে ফাটল ধরেছে। রায়গঞ্জের মোরদিয়া, শ্রীরামপুর, ঘুড়কা, দেওভোগ, বাসুদেবকোল, ঝাপড়া এবং তাড়াশ উপজেলার কোহিত, তালম, সিলট, নাদোসৈয়দপুর বাজার পাড়া, কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী, গাড়াবেড়, উল্লাপাড়ার নবগ্রাম, ডি. তেতুলিয়া, পাগলাবোয়ালিয়া, পাটধারী, বন্যাকান্দি, বেতকান্দি, মাটিকোড়া, শাহজাহানপুর, মনিপুর, বনবাড়ীয়া, নুরগঞ্জ, তারুটিয়া, বিনায়েকপুর, পুস্তিগাছা, ধরইল, দবিরগহ্জ, সোনতালা, শাহজাদপুর উপজেলার রাণীকোলা ও খুকনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২১টি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এর প্রায় সবগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব স্কুলে খোলা আকাশ বা গাছতলায় নেওয়া হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা। উল্লাপাড়ার মাটিকোড়া প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, ২০০১ সালে নির্মিত একতলা ভবনটি ভূমিকম্পের আঘাতে দেয়াল ও ছাদের প্রায় সব স্থানে ফাটল ধরেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসরুমে ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের বারান্দায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। শাহজাদপুরের রানীকোরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান, ১৯৯৫ সালে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। দুদফা ভূমিকম্পে ভবনটির দেয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্ক বেড়ে যাওয়ায় মাঠে ও গাছতলায় নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা। সদর উপজেলা মালসাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াছমিন বলেন, বিদ্যালয়ের চারদিকে ফাটলের পাশাপাশি পঞ্চশ শ্রেণির কক্ষে পলেস্তারা খসে পড়ছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসতে দিতে ভয় পাচ্ছেন। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশলীরা বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করে মতামত দেবেন। তার ভিত্তিতে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত যেভাবে ক্লাস ও পরীক্ষা চালানো হচ্ছে সেভাবেই চলবে।