বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিষয়খালী গ্রামের মানুষের জীবন এখন বিষময়

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের মানুষের জীবন এখন বিষময়। প্রভাবশালীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা। কারণে-অকারণে তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। করা হয় ভিটেছাড়া। তৈরি হয় জাল দলিল। চিহ্নিত এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও নির্বিকার প্রশাসন- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। ঝিনাইদহ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) গোপিনাথ কানজিলাল জানান, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর জানান, কয়েকটি ঘটনায় মামলা হয়েছে শুনেছি। সব বিষয়ে আমি অবগত নই। নির্যাতনের শিকার কামাল হোসেন জানান, সম্প্রতি তার বৃদ্ধা মা শাহারবানুকে বিনা কারণে পিটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় মামলা করে মাকে নিয়ে তিনি এখন গ্রামছাড়া। খন্দকার লুলু জানান, তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। অমূল্য নামে এক ব্যক্তিকে গ্রামছাড়া করে তার বসতবাড়ি ও জমি দখল করে নিয়েছে ওই প্রভাবশালীরা। নির্যাতনের শিকার একই গ্রামের কামরুজ্জামান জানান, সন্ত্রাসী রকনু, জাহাঙ্গীর ও রোবে আমাকে বিতাড়িত করে জায়গা-জমি দখল করে রেখেছে। তাদের ভয়ে গ্রামে যেতে পারি না। পূর্ব বিষয়খালীর হিন্দুপাড়ার নির্মল দত্তকে স্ত্রী ও দুই মেয়ের সামনে মারতে মারতে বিবস্ত্র এবং ভারত যেতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একই এলাকার শক্তিমল দত্তকে মারপিট করে বসতবাড়ি বিক্রি করাসহ ঝিনাইদহ শহরে যেতে বাধ্য করা হয়। বিষয়খালী বাজারের অতুল কুমার বিশ্বাসের ৬০ শতক জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে। মামলা করায় তাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বরিন বাবু, বিরু বাবু, লক্ষণ মিস্ত্রি ও হরি মিস্ত্রিকে অত্যাচার নির্যাতন করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই গ্রামের কলু সম্প্রদায়ের জাফর, জয়নাল, কোরবান ও আজগরের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে দখল করা হয়েছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। ওই গ্রামের শফিকুল খোন্দকারের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে পুকুরের মাছ ধরে নেওয়াসহ জমি দখল করা হয়। খোন্দকার দলিল উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন ও কামাল হোসেনের বসতবাড়িসহ জমি দখলের চেষ্টা চলছে। দখল করা হয়েছে বিষয়খালী বাজারে তরুণ ও অশীতের জমি। সিরাজ খন্দকারের জমি দখল করে তার ছেলেদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে।

পূর্ব বিষয়খালীর মুক্তিযোদ্ধা রহিমপাহর স্ত্রী ও ছেলে মফুকে মারধর ও উচ্ছেদ করে চেষ্টা চলছে জমি দখলের। একই গ্রামের ফারুকের শিশুকে নির্যাতন করে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে ১০ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছে। এলাকার মুরব্বি খোন্দাকার সিরাজকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। এ সময় তার ছেলে টুকু বাধা দিলে তাকেও রক্তাক্ত করে সন্ত্রাসীরা। অপর মুরব্বি মজিদ মিয়াকে প্রহার এবং তার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আরিফ চৌধুরী ওরফে রহিমের একটি চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তপূর্বক সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর