বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

মিলন হত্যা মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

মিলন হত্যা মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

বহুল আলোচিত নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কিশোর সামছুদ্দিন মিলন হত্যা মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) রেকর্ডকৃত সিডিসহ তলব করেছে বিজ্ঞ আদালত। এই মামলার ধার্য তারিখ আজ বুধবার সকালে কোম্পানীগঞ্জ আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সমরেশ শীল এই আদেশ দেন।

জানা যায়, গত ২৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ মিলন হত্যা মামলার মূল তারিখ ছিল। এদিকে আদালতে ধার্য তারিখের আগে তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন এবং একইভাবে মামলা চালাতে অপারগতা প্রকাশ করে মামলার বাদী মিলনের মা কোহিনুর আক্তার মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে দরখাস্ত দাখিল করেন। এই নিয়ে ২৮ জুলাই বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি উর্ধতন প্রশাসনের নজরে আসে।

আজ বুধবার ছিল মামলার ধার্য তারিখ। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি শুনানির জন্য আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর পুনরায় দিন ধার্য করেন। একই সাথে মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা সহ মামলার রেকর্ডকৃত সিডি তলবের নির্দেশ দেন।

জানা যায়, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাকঁড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে বিক্ষুদ্ধ জনতার সামনে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়ার পর কিশোর শামসুদ্দিন মিলকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনীতে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে তখন বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় দেশ ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় নিহত মিলনের মা ২০১১ সালের ৩ই আগস্ট নোয়াখালী ২নং আমলী আদালতে হত্যা দায়ের করেন।

আদালতের নির্দেশে একই বছর ৮ই আগস্ট মামলাটি কোম্পানীগঞ্জ থানায় রেকর্ড হয়। শুরুতে মামলাটি কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে নোয়াখালী ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি ওসি) আতাউর রহমান চলতি মাসের ০১ জুলাই ২০১৫ ইং তারিখে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে সদর সার্কেল অফিসে পাঠান। পরবর্তীতে একই সপ্তাহে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এতে বাদী মিলনের মা কোহিনুর আক্তার মামলাটি চালাবেন না বলেও উল্লেখ করা হয়। এর আগে এ মামলায় স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও চিত্র দেখে গণপিটুনীতে অংশ নেয়া ২৬ জন আসামীকে সনাক্ত করে পুলিশ। যাদের মধ্যে ৫ জনকে আটকের পর দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

নিহত মিলনের মা কোহিনুর আক্তার জানান, ঘটনার ৪ বছর পরও মামলার কিছুই হয়নি। এই জন্য আমি হতাশ, তাছাড়া আমার বাড়ি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে অনেক দুরে, সেখানকার লোকজনকে মামলার স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য বার বার তাদের কাছে গেলেও কেউ আসামাীদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিতে রাজি নহে। আমি গরীব মানুষ মামলা চালাতে হীমসিম খাচ্ছি। এই জন্য মামলা চালাতে আমার আর ইচ্ছা নেই। আমি পারছি না, আমি মিলনের বাবার সাথে কথা বলে আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য দরখাস্ত দাখিল করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এটিএম মহিব উল্লাহ্ জানান, আদালতে মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থানের পর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট পরবর্তী শুনানী দিন আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তদন্তকালীন সময়ে রেকর্ডকৃত সকল কাগজপত্র (সিডি) উপস্থাপন করতে বলে। একই সময় মামলার বাদী নিহত মিলনের মা কোহিনুর বেগমকে হাজির হওয়ার আদেশ দেন।

এই বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা (ডিবি ওসি) জানান, মামলাটি দীর্ঘ তদন্তের পর চলতি মাসের ১ম সপ্তাহে ২নং আমলী আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বলে জানান। বাদী মামলা চালাবেনা বলে বক্তব্য দিয়েছেন।

বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ জুলাই ১৫/ সালাহ উদ্দীন  

সর্বশেষ খবর