সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

রংপুরে আমন চাষে কৃষকের অনীহা

পর পর গত দুই বছর ধান চাষ করে লোকসান হওয়ায় রংপুরের কৃষকদের মাঝে আমন চাষে অনীহা দেখা দিয়েছে। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ধান উৎপাদনের উপযোগী জমিতে সবজি ও ডালজাতীয় ফসল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকরা। এ বছর আমন আবাদ মৌসুমের প্রায় অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১২ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা ব্যক্ত করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জুলফিকার হায়দার জানান, ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকের মধ্যে কিছুটা হতাশা আছে। তারপরও কৃষক ধান লাগাবে। তার মতে, আমন চারা রোপণের উপযুক্ত সময় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট। এ সময়ের মধ্যে চারা রোপণ না করলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় না। তবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চারা রোপণ করলেও কোনো সমস্যা হবে না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার আট উপজেলায় এক লাখ ৬২ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৪ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ২২ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি ১৫ দিনে লক্ষ্যমাত্রার ৮৮ ভাগ জমিতে চারা রোপণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে খোদ কৃষি বিভাগই। পর পর দুবার উৎপাদিত ধানের নায্যমূল্য না পাওয়াকে এ পরিস্থিতির কারণ বলে চিহ্নিত করেছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। জুলফিকার হায়দার জানান, গত আমন মৌসুমে কৃষককে মণে ৩০০-৩৫০ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা রাস্তায় ধান ঢেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পরিস্থিতি এখনো আগের মতোই আছে। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাইদাহারা গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘লাভের আশায় ধান আবাদ করি দুই বছর ধরি খালি লোকসান খাইতুচি। লোকসান দেওয়ার ভয়ে এবার সংসারে খাইতে যে পরিমাণ চাউল নাগে সেই পরিমাণ ধানের জন্যে দুই একর জমিত চারা নাগাচি। বাকি তিন একর জমিত ডাইল ও শাক-সবজি আবাদ করার সিদ্ধান্ত নিচি।’

সর্বশেষ খবর