শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে নাটোরের বড়াইগ্রামে মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্রী ও তাদের নারী ও পুরুষ অভিভাবকরা। এ সময় তাদের উপর লাঠি নিয়ে হামলা চালিছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর হযরত আয়েশা(রা.) মহিলা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদ্রাসায় গিয়ে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন ও মোবারক হোসেনকে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং মাদ্রাসাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে এক বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো সাড়ে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাদরাসার সামনে মানববন্ধন করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকসহ এলাকার কয়েকশ নারী ও শিক্ষার্থী। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা পোড়া জলিলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা নারী ও শিশুদের উপর লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রতিবাদকারী সাইফুল ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে ব্যাপক মারপিট করে এবং রোকনুজ্জামান রোকন নামে অপর এক মৌলভীকে মারতে মারতে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। এ সময় অনেক নারীকে লাঠি হাতে নিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সময় মাদ্রাসার ভিতরে শত শত ছাত্রী ও তাদের নারী অভিভাকরা হামলাকারীদের বিচার দাবি করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।তারা জানান, যে ছাত্রীর অভিযোগে দু'জন হাফেজ শিক্ষককে জেল জরিমানা করা হলো সেই ছাত্রী আরও ৬ বছর আগে হাজী মোহাম্মদ আলী নামে অপর এক বৃদ্ধ ক্বারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছিল এবং পরে ওই বৃদ্ধ হাজীর মৃত্যু হয়।
এদিকে, মাদ্রাসার অন্য কোন ছাত্রী এমন অভিযোগ না করলেও একই ছাত্রী বার বার একই অভিযোগ করায় বিষয়টি সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ আগস্ট, ২০১৫/মাহবুব