মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বৈধ ইজারাদার হটিয়ে রেলের জমি দখল

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোর জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ও নাটোর  পৌরসভার কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম ওরফে আরজু শেখের বিরুদ্ধে রেলের ইজারা নেওয়া বৈধ মালিককে উচ্ছেদ করে সে জমি অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইজারাদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, নাটোর রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশের ২৮ নম্বর  রেলওয়ে প্লটের ৭৫০ বর্গফুট বাণিজ্যিক জমি টেন্ডারের মাধ্যমে ১৯৮১ সালে ইজারা নেন ইসমাইল হোসেন। পরে তিনি মারা গেলে ১৯৮৬ সালে তার ছেলে আনোয়ার হোসেন জমিটি ইজারা নেন। আগামী জুন মাস পর্যন্ত এই জমির যাবতীয় খাজনা তিনি পরিশোধ করে নিজ নামে কাগজপত্র করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি সরকারকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়েছেন। জমিটির উন্নয়নে ব্যয় করেছেন আরও পাঁচ লাখ টাকা। আনোয়ার হোসেন পেশায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মুখ্য প্রকৌশলী ছিলেন। সম্প্রতি অবসর নেওয়ার পর তিনি ওই জমিতে দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু জসমত আলী নামের এক লোক সেখানে জোর করে তার ছেলে রাজুর নামে ‘রাজু হোটেল’ নির্মাণ করেন। কিছুটা জায়গা টেম্পো শ্রমিকরা দখল করে টেম্পোস্ট্যান্ড করেছে। ১৫ মার্চ রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমির বৈধ ইজারাদার আনোয়ার হোসেনকে দখল বুঝিয়ে দেন। তিনি তাত্ক্ষণিক ঢেউটিন দিয়ে জায়গাটি ঘিরে নেন এবং ইট ফেলেন। আনোয়ার হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পরপরই স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর (আওয়ামী লীগ সমর্থিত) ও আজিজুল ইসলাম ওরফে আরজু শেখ তার লোক দিয়ে সব টিন ও ইট তুলে নিয়ে যান। শুক্রবার আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই আকতার হোসেন ওই জমিতে গেলে তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে আর কখনো ওই জমিতে গেলে তার পরিণাম ভালো হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। সংসদ সদস্য ঢাকা থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত ওই জমিতে কোনো স্থাপনা না করার জন্য মুঠোফোনে আরজু কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই প্রকৌশলী ঘটনাটি নাটোর পৌরসভা মেয়র উমা চৌধুরীকে জানান। তিনিও ওই কাউন্সিলরকে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে জমিটি প্রকৌশলীকে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া ওই প্রকৌশলী ঘটনাটি লিখিতভাবে নাটোর সদর থানাকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসে। কিন্তু সবার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে শনিবার রাতে স্থানীয় কাউন্সিলরের লোকজন জমি ঘিরে পাকা দেয়াল তুলে দখল পোক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে কথা বলতে কাউন্সিলর আরজু শেখের সঙ্গে গতকাল বিকালে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জায়গাটা আমাদের দখলেই ছিল। তারা অবৈধভাবে মালিকানা দাবি করছে। আসলে তারা প্রকৃত মালিক না। আমি কারও জায়গা অবৈধভাবে দখল করিনি।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ পাঠিয়ে শুক্রবার দখলদারদের হটিয়ে দিয়েছিলাম। তবে শনিবার রাতে কে বা কারা দেয়াল তুলেছে বলে শুনেছি।’

সর্বশেষ খবর