রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রকাশ্যে নৌকায় সিল

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ্যে নৌকায় সিল

সকাল সোয়া ১০টা। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ী ভোট কেন্দ্র। ৩০ বছরের এক যুবক ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকা সমর্থকদের না দেখিয়ে সিল মেরেছেন। তাই বাক্সে ফেলার আগে ব্যালট দেখাতে বললেন নৌকার সমর্থকরা। যুবকটি ব্যালট না দেখানোয় তার কপালে জুটল চড়-থাপ্পড়। ২ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায় পোলিং অফিসার শুধু মহিলা মেম্বার পদের ব্যালট নিয়ে ভোটারের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন। চেয়ারম্যানের ব্যালট পেপার কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, ‘ওটা আগেই সিল মেরে বাক্সে ভরা হয়েছে।’ ১১টার দিকে সয়দাবাদ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নৌকার এজেন্টরা ভোটারদের দিয়েই প্রকাশ্যে চেয়ারম্যান পদের ব্যালটে সিল দিয়ে নিচ্ছেন। বিএনপি প্রার্থী এ প্রতিবেদকের সামনে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দেন। উত্তরে প্রিসাইডিং অফিসার বললেন, ‘নিষেধ করেছি, কেউ কথা শোনে না।’ পঞ্চসারটিয়া কেন্দ্রে দেখা যায় এক নম্বর বুথের নৌকার এজেন্ট প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারছেন। দুপুর আড়াইটায় কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের কামারখন্দ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ব্যালট পেপারের মুড়িতে হাতে লেখা ভোটারের ক্রমিক নম্বর নেই। একই কেন্দ্রে ১ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায় ১৪-১৫ কিশোরের লাইন। তারা পোলিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে সিল মেরে বাক্স ভরছে। প্রিসাইডিং অফিসার আবদুস ছামাদ বললেন, ‘কিছু অনিয়ম হচ্ছে। নিষেধ করেছি, কেউ মানেনি।’ দশশিকা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নেতা পিয়ার চৌধুরী প্রতিটি রুমে টহল দিচ্ছেন। এজেন্টরা ভোটারদের প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরে অন্য ব্যালটগুলো বুথে নিয়ে মারতে নির্দেশ দিচ্ছেন। নৌকা সমর্থকদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, ‘নৌকায় সিল প্রকাশ্যে মারলেই হবে। অন্যগুলো ভিতরে নিয়ে মারলে আমাদের সমস্যা নেই।’ একই চিত্র ভদ্রঘাট ইউনিয়নের কুটিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। এসব কেন্দ্রে বিএনপিসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ছিল না। তাড়াশের সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল ভোট কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা প্রকাশ্যে সিল মেরে নিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর