শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে সোনারামপুর গ্রাম হুমকিতে জাতীয় গ্রিড লাইন

মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে সোনারামপুর গ্রাম হুমকিতে জাতীয় গ্রিড লাইন

ভাঙনকবলিত মেঘনা নদীবেষ্টিত আশুগঞ্জের সোনারামপুর গ্রাম —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সোনারামপুর গ্রামের দেড় কিলোমিটার গত তিন বছরে মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনের ফলে ইতিমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে চরের পূর্ব দিকের বিরাট অংশ। ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড সঞ্চালন লাইন। বর্ষা এলেই প্রতিবছর শুরু হয় ভাঙন। কয়েক বছর আগে ওই এলাকায় ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনকে এর জন্য দায়ী করছেন চরবাসী।

জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে আশুগঞ্জে মেঘনার বুকে জেগে উঠা চরটি চরসোনারামপুর গ্রাম নামকরণ করা হয়। এটি আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড। পাঁচ শতাধিক পরিবারের তিন হাজারের বেশি মানুষ বাস করেন এই চরে। সরজমিনে দেখা যায়, চরের পূর্ব দিকের বিরাট অংশ মেঘনার গর্ভে চলে গেছে। ঢেউয়ের আঘাতে পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিক ভাঙছে। চরের মাঝখানে আশুগঞ্জের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি বড় টাওয়ার। এটি আশুগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের লাইন। এই গ্রিডের লাইনের মাত্র কয়েক গজ দূরে নদী। গ্রামের বাসিন্দা সুভাস, রঞ্জিত, মন্টু, অজিত জানান, কয়েক বছর আগে অপরিকল্পিতভাবে ওই এলাকায় ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হয়। এরপর শুরু হয় ভাঙন। এর মধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার চলে গেছে নদীর পেটে। চারদিক থেকে ছোট হয়ে আসছে চরটি। এ বছর যেভাবে ভাঙা শুরু হয়েছে, এভাবে চলতে থাকলে গ্রামটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল্লাহ জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশুগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন জানান, একটি মহল ড্রেজার দিয়ে ওই এলাকায় বালু উত্তোলন করেছিল। এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে তা বন্ধ হয়। আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান জানান, চরের উপর জাতীয় গ্রিডের লাইনটি সম্পর্কে গত বছর আশুগঞ্জ ইউএনও প্রতিবেদন দিয়েছিল। বর্তমানে কতটুকু ভেক্ষো বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে চরটি রক্ষা করা যাবে না। জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রাকৃতিকভাবে মেঘনার ঢেউয়ে চর ভাঙছে। চরে বিদ্যুতের বড় টাওয়ার ও একটি গ্রাম থাকায় তিন বছর সেখানে বালু মহল বন্ধ রাখা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ স্থানীয় এমপি অ্যাড. জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি সম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর