বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

টাকায় খারাপ ধানও হয়ে যায় ‘ভালো’

ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

‘টাকা না দিলে ধানে চিটা, আর্দ্রতা কমসহ নানা সমস্যা। আর প্রতিটন ধানের বিপরীতে খাদ্য নিয়ন্ত্রককে পাঁচ হাজার টাকা দিলেই সব সমস্যা সমাধান। চিটা, আর্দ্রতাবিহীন খারাপ ধানও তখন ভাল হয়ে যায়। কর্মকর্তারা এই রকম হইলে সরকারের কাছে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করবো কিভাবে। টনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা দিলে লাভের বদলে গুনতে হবে লোকসান।’ কথাগুলো বলছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা খাদ্য গুদামে ন্যায্যমূলে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক নিহার রঞ্জন (ছদ্মনাম)।  সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সরকারি গুদামে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে যাওয়া নসিমন, টমটম আর ভ্যান নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কৃষক। তাদের অভিযোগ, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাদাত হোসেন সবার ধান পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, ধানে আর্দ্রতা কম থাকায় কারো ধান নেওয়া যাবে না। তবুও হাল ছাড়েননি তারা। অজিত শিকারী নামে এক চাষী গুদাম কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আবিষ্কার করলেন ধান বিক্রির বিশেষ উপায়। অজিত জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনিসহ কয়েকজন গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে আর্দ্রতা কম, চিটাযুক্ত বলে নানা ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তার (খাদ্য নিয়ন্ত্রক) দাবি অনুযায়ী প্রতিটনে পাঁচ হাজার টাকা উেকাচ দিতে রাজি হওয়ায় পরক্ষণেই ধানগুলো ভাল হয়ে যায়। বিকালেই ওই ধান জমা হয় গুদামে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, সিন্ডিকেট করে গুদামে ধান বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়ে এমন অভিযোগ করতে পারে। তিনি বলেন, জায়গা না থাকায় ধান ক্রয় বন্ধ রয়েছে। যদিও এক হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আগৈলঝাড়ায় ধান ক্রয় হয়েছে ৬৫০ মেট্রিক টন। এবার ৫ মে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের ঘোষণা থাকলেও আগৈলঝাড়ায় ধান ক্রয় শুরু হয় ১৭ মে। নানা কারণে কয়েক দফা ধান কেনা বন্ধ থাকার পর আবারো ধান সংগ্রহ শুরু হলে তা মনিটরিং কমিটির সদস্যদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর