শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাগেরহাটে ‘জঙ্গি তালিকা’য় নামের ভয় দেখিয়ে প্রতারণা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে উড়ো ফোন করছে একটি চক্র। বলছে, ‘জঙ্গি তালিকায় আপনার নাম আছে। কাটাতে হলে খরচা লাগবে।’ চক্রটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয় দিয়ে মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষকদের দফায় দফায় ফোন করে ভয় দেখিয়ে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। বাগেরহাটের ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও মংলা উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষকদের কাছে এমন উড়ো ফোন আসছে বলে বিভিন্ন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত করেছে। ফোন পেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকদের কেউ কেউ ছুটে গেছেন জেলা ডিবি পুলিশের কার্যালয়, আবার কেউ কেউ গেছেন স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে। পুলিশ জানায়, মংলা পৌর শহরতলির আরাজী মাকোডোন দাখিল মাদ্রাসা সুপার মো. মনিরুজ্জামানকে গত সোমবার বিকাল ৩টায় গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আলতাফ পরিচয় দিয়ে ০১৮৫৯১৬৬৪৩০ নম্বর থেকে ফোন করা হয়। তাকে বলা হয় ‘জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার জঙ্গি তালিকায় আপনার নাম আছে। ইচ্ছে করলে আপনি এ তালিকা থেকে নিজের নাম কাটাতে পারেন। কিছুক্ষণ পর আমার স্যার আপনাকে ফোন করবেন। তাকে খুশি করতে পারলে আপনার নাম কাটানো সম্ভব।’ এরপর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা দাবি করে জনৈক মিজানুর রহমান সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে ০১৬১১১০৯৭৪২ নম্বর থেকে মাদ্রাসা সুপার মো. মনিরুজ্জামানকে ফোন করেন। ‘‘আপনি মাদ্রাসা সুপার ওমুক? ‘জি, স্যার’ বললে মিজান বলেন, বিকালে আমার অফিস থেকে আপনাকে ফোন করা হয়েছিল এবং আপনি নিশ্চয় সবকিছু শুনে নিয়েছেন! এখন জঙ্গি তালিকার লিস্ট আমার টেবিলে, এ তালিকা ধরেই ক্রসফায়ার দেওয়া হবে। আপনি যদি এ তালিকা থেকে নাম কাটাতে চান তাহলে কিছু খরচখরচা আছে, আর এজন্য আপনাকে জেলা সদরে এসে আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে হবে। এ কথা বলেই ফোন কেটে দেওয়া হয়।’’একইভাবে মংলার কোরবান আলী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. গোলাম মোস্তফা, চাঁদপাই পীর মোছের শাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. হুমায়ন কবির, দক্ষিণ চিলা মাদ্রাসা সুপার মাওলানা নওশের আলী, কচুবুনিয়ার দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা কবির হোসেনসহ আরও অনেক মাদ্রাসা শিক্ষককে একই নম্বর থেকে ফোন করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ওই দুই প্রতারক। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসা শিক্ষকরা থানায় জিডি করেন।

বাগেরহাট পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, প্রতারক চক্রের কললিস্ট সংগ্রহ করে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারি করছে। এ ছাড়া প্রতারক চক্রের কাছ থেকে ফোন পেলে সংশ্লিষ্ট থানা অথবা সরাসরি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জানানোর জন্য মাদ্রাসা শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর