রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিচারের আওতায় আসেনি অভিযুক্তরা

মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রী হত্যার এক বছর

মাদারীপুর প্রনিনিধি

মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা মামলায় এক বছরেও বিচারের আওতায় আসেনি অভিযুক্তরা। এমনকি আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অসহায় নিহতদের দুই পরিবারকে দফায় দফায় হুমকি দিলেও পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নিহতদের পরিবারবর্গ। উজ্জল নামে এক আসামি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে মামলার পরই।  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী  সুমাইয়া ও হ্যাপীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ পরে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। কিন্তু মামলার এক বছরেও আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে ৪ বার। মামলার প্রধান আসামি রানা নাগাসীসহ অন্যরা গ্রেফতার হলে জামিনে বেরিয়ে এসে প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে অসহায় ওই দুই পরিবারকে দফায় দফায় হুমিক দিচ্ছে আসামিরা। এ বিষয়টি একাধিকবার পুলিশকে জানালেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি নিহতদের পরিবাররা। নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার বলেন, ‘আমার মেয়েকে হত্যার এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। শুরু থেকেই পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে গুরুত্ব দেয়নি। এখন সিআইডিতে গেছে, তবে সঠিক বিচার পাব কিনা জানা নেই। আমি এমন বিচার দাবি করি, যেন প্রতিটি বাবা তার মেয়েদের স্কুলে দিতে ভয় না পায়।’

এদিকে নিহত হ্যাপীর মা মুক্তা আক্তার বলেন, ‘আসামিরা জামিনে এসে আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। কয়েকদিন আগে প্রধান আসামি রানা নাগাসী রাতে কয়েকজনকে নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমি পুলিশকে বিষয়টি বললেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আমরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় হতাশ এলাকাবাসী ও নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা। তারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। বর্তমানে মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত হ্যাপী ও সুমাইয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এখনো ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট আমাদের হাতে আসেনি। যে কারণে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে।’   উল্লেখ্য, এ ঘটনায় সদর থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা ও  মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণ শেষে বিষ খাইয়ে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর প্রধান আসামি রানাসহ ৪ জন গ্রেফতার হলেও তারা জামিনে বেরিয়ে আসে।

সর্বশেষ খবর