মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী যোদ্ধারা স্বীকৃতি চান

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার প্রতিবাদকারী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দুই শতাধিক যোদ্ধা দারিদ্র্য, অবহেলা ও অসুখ-বিসুখে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম বেঁচে আছেন। প্রতিবাদকারী মো. আজগর আলী (৬২) জেল খেটেছেন ১০ বছর। জেলখানায় নির্যাতনের শিকার হয়ে আজো চিকিৎসা করতে হয় দুই মাস পরপর। জীবনের শেষ সময়ে এসেও ঢাকায় সিকিওরিটি গার্ডের চাকরি করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আজগর আলীর। উপজেলা প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে উপজেলার সীমান্তবর্তী চৌকিদার টিলায় একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৭৫ জন যুবক বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে এক মাস প্রশিক্ষণ নেন। পরে ভারতের চান্দুভই এলাকা বরাবর কুড়িগ্রামের রৌমারী থেকে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত সীমান্তে নানা কর্মকাণ্ড চালান। ২২ মাস পর নানা নির্যাতন ও পরাজয়ের গ্লানি ভোগ করে তারা ফিরে আসেন। এদের মধ্যে আজগর আলী, শফিকুল ইসলাম, জিনাত আলী, গৌরাঙ্গ পাল ১০ বছর করে কারাভোগ করেন। ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের একটি শাখা উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই সংগঠনের অনেকেই ইতিমধ্যে মারা গেছেন। এখনো বেঁচে আছেন দুই শতাধিক প্রতিরোধ যোদ্ধা। অবহেলা ও অসুখ-বিসুখে তারা খুবই কষ্টে আছেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার ও শহীদ পরিবারকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেন। এ ছাড়া গত বছর উপজেলার ৪১ জন প্রতিরোধ যোদ্ধার প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। প্রতিরোধ যোদ্ধারা এখন বেশির ভাগ অভাব-অনটনে দিন কাটান। অনেকেই ভিটেবাড়ি না থাকায় অন্যের বাড়িতে থাকেন। বেঁচে থাকা যোদ্ধারা জাতীয়ভাবে একটা স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করেন। উপজেলা প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি  ফজলুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারীরা নানাভাবে অবহেলিত। এ ছাড়া সবাই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনজন শয্যাশায়ী। টাকার অভাবে চিকিৎসা হয় না। অনেকের কাজ করার শক্তি ও সামর্থ্য নেই।  প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।

সর্বশেষ খবর