বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

তিনটি ট্রলার ডুবে ১৬ জেলে নিখোঁজ, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগর

প্রতিদিন ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দুই দিন ধরে উত্তাল রয়েছে সাগর। ঝড়ের কবলে পড়ে মঙ্গলবার রাত ও গতকাল তিনটি ট্রলার ডুবে গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন এসব ট্রলারের ১৬ জেলে। বাগেরহাটের মংলা ও পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে তিন ও বরিশালে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় অভ্যন্তরীণ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরগুনা ও ভোলায় তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— বাগেরহাট : মংলা বন্দরসহ উপকূলের সতর্ক সংকেত থাকায় ফিশিং ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কবলে গতকাল সুন্দরবন উপকূলে দুটি ফিশিং ট্রলার ডুবে ১৬ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। মংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদস্যরা তাদের উদ্ধারে বিকাল থেকেই অভিযান শুরু করেছেন। ঝড়ো হাওয়া ও টানা বৃষ্টিতে মংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই ও খালাস ব্যাহত হচ্ছে। জেলার উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল ২-৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ডুবে যাওয়া ট্রলার দুটি হলো এফবি অভি ও এফবি ভাইবোন। এফবি অভির মালিক আশুতোষ সরকার ও বরগুনা মত্স্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে ১৩ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন— সেলিম, আবু, হাচান, কনু, মিলন, হাসান, সালেক, হাবিব, খলিল, কনু, আলম, ঈসা ও হোসেন। পটুয়াখালী : আলীপুর-মহিপুর মত্স্য বন্দরের এফবি মায়ের দোয়া-৩ নামের একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পর ট্রলারে থাকা জেলেদের উদ্ধার করেছে অন্য ট্রলারের জেলেরা। গতকাল সকাল থেকে আরও আটটি ট্রলারসহ শতাধিক জেলের সঙ্গে মালিকরা যোগাযোগ করতে পারছে না। পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদীবন্দরে রয়েছে ২ নম্বর সংকেত। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের ছোট লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে কুয়াকাটা সৈকত এলাকায়। বরিশাল : দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশাল নদীবন্দরে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো ছেড়ে গেছে বলে জানান নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল কখনো থেমে থেমে আবার কখনো ভারি বৃষ্টি হয়েছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে। দমকা হাওয়ার কারণে সর্বত্র বেড়েছে পানি। বরগুনা : বিষখালী, বুড়িশ্বর ও বলেশ্বরে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন দুবার করে জোয়ারের পানিতে ভাসছে আর ভাটায় শুকাচ্ছে বরগুনার ছয় উপজেলার ৪৫টি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিষখালী নদীর ক্রোক পয়েন্টে জোয়ারের উচ্চতা ছিল তিন দশমিক ২৭ মিটার। এতে তলিয়ে গেছে ফেরিঘাট, শহরের বিভিন্ন রাস্তাসহ নিম্নাঞ্চল। যানচলাচল ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছে হাজারো মানুষ। আড়াইশ যাত্রী নিয়ে মেঘনার চরে আটকা গ্রীন লাইন : আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে হিজলা সংলগ্ন মেঘনার শাখা নদীর মিয়ার চরে আটকা পড়েছে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী ক্যাটারিং ওয়াটার বাস সার্ভিস গ্রীন লাইন-৩। গতকাল সন্ধ্যা পৌঁনে ৬টার দিকে জাহাজটির সুকান বিকল হয়ে যাওয়ায় কয়েকটি চক্কর দিয়ে এটি চরে ঠেকে যায়। তবে জাহাজটি অক্ষত আছে। সব যাত্রী নিরাপদে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক রিয়াদ হোসেন। তিনি জানান, জাহাজটির সুকার ডান দিকে কাজ করে কিন্তু বাম দিকে কাজ করে না। এ কারণে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মিয়ার চরে উঠে যায়। আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করে থাকা একই কোম্পানীর গ্রীন লাইন-২ নামে অপর একটি জাহাজ মিয়ার চরে পাঠানো হয়েছে। তাদের নিয়ে গ্রীন লাইন-২ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা যাবে। চরে আটকে পড়ার আগে জাহাজটি তীব্র ঝড়ের কবলে পড়ে বলে জানিয়েছেন ওই জাহাজের এক যাত্রী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর