শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

২০ বছরেও বিচার হয়নি ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার

রাঙামাটি প্রতিনিধি

দীর্ঘ ২০ বছরেও বিচার হয়নি রাঙামাটির লংগদু পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার। শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের শোকাবহ এক কালো দিন। বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার না  পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত নিহতদের পরিবার। ১৯৯৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলার লংগদু-বাঘাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকুয়াখালী নামক গহিন অরণ্যে ৩৫ কাঠুরিয়াকে তিন দিন ধরে হাত-পা ও চোখ বেঁধে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেদিন তাদের মধ্যে ইউনুছ নামের এক কাঠুরিয়া পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। পরে ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ ও  সেনাবাহিনী পাকুয়াখালী হতে ২৮ জন কাঠুরিয়ার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। বাকি ৭ জন কাঠুরিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি।  সেদিন থেকে পার্বত্যাঞ্চলের  বাঙালিরা এ দিনটিকে পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু গণহত্যার মধ্যে অন্যতম ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অভিযোগ, ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার পর পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সংসদীয় টিম লংগদু সফর করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরবর্তী সরকারগুলোও একই আশ্বাস দিলেও এখনো এ ঘটনার কোনো কুল কিনারা হয়নি। পুনর্বাসিত হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবছার আলী জানান, উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বিনা অপরাধে ৩৫ বাঙালিকে হত্যা করেছে। কিন্তু তার বিচার হয়নি। শুধুমাত্র পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া নয়, পার্বত্যাঞ্চলে অনেক বাঙালি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার একটিরও বিচার হয়নি।  পাহাড়ের মানুষগুলো দীর্ঘ বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে এসব হত্যার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে  বিচার শুরু করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। এদিকে, পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার লংগদুতে গণকবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে রাঙামাটি জেলায় ৫ বাঙালি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র ঐক্য পরিষদ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণ পরিষদসহ স্থানীয়রা। তাছাড়া বাকি দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানেও পাকুয়াখালী ট্র্যাজেডি দিবস পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর