শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নার্সারির নামে রেলের জমি দখল

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

নার্সারির নামে রেলের জমি দখল

রেলের জায়গায় নার্সারি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মুক্তিযোদ্ধা কৃষি ও নার্সারি প্রকল্পের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রেলের প্রায় ২৫ কোটি টাকা মূল্যের দুই একর জমি দখলে নিয়েছেন ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা। শহরের ভানুগাছ সড়কে দখলক করা ওই জমিতে টিনের বেড়া দিয়ে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। একটি স্থাপনায় টাঙানো হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। প্রবেশ পথের গেটে লেখা রয়েছে, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধা কৃষি ও নার্সারি প্রকল্প।’

রেলের জমি দখলে নিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান ব্যবহারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদ হোসেন ইকবাল। তিনি বলেন, রেলের জমি দখল হয়েছে, এ রকম খবর আমাকে অনেকেই জানিয়েছেন। কেউ যদি অবৈধ দখল নিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুর স্লোগান ব্যবহার করেন সেটা গর্হিত কাজ। মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুণ বলেন, রেলের জমি দখলের জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির অপব্যবহার করা হচ্ছে। যা প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে ক্ষোভ জাগিয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, দখল জমির ওপর বাস ও টিন দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। স্থাপনার পাশেই রাখা হয়েছে ৮-১০টি ফুলের টব। নার্সারির জন্য তৈরি করা হয়েছে ৪-৫টি প্যাড। এসব কাজ তদারকি করছেন মুক্তিযোদ্ধা আসলাম, হাবিবুর রহমান, আবদুল হাকিম, আবদুল মান্নান, আবদুস সোবহান ও অমলেন্দু পাল। আসলাম বলেন, ‘আমরা ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা দুই দশমিক ৮৭ একর জমিতে নার্সারির জন্য রেলওয়ে এস্টেট বিভাগে আবেদন করেছি। আবেদনটি এখনো প্রক্রিয়াধীন। রেলের জমিতে আমরা নার্সারির জন্য স্থাপনা ও প্যাড তৈরির কাজ করছি। এ নার্সারি থেকে অর্জিত আয় অসহায়-অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় হবে।’ শ্রীমঙ্গল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার কুমোদ রঞ্জন বলেন, ‘রেলের এই জমিতে শেয়ার থাকার জন্য আমাকে অনেকে অনুরোধ করেছেন। আমি সায় দিইনি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদেরও এসব কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা নেই।’ বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (পূর্ব) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি দুই মাস হয় এ পদে এসেছি। শ্রীমঙ্গল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের কৃষি ও নার্সারি প্রকল্পের নামে লিজের কোনো আবেদন আমার দফতরে আসেনি। রেলের জমি মুক্তিযোদ্ধাদের নামে দখলের বিষয়টি এখনই জানলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি। কেউ রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে দখল করলে অবশ্যই আমরা উচ্ছেদে যাব।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল হক বলেন, ‘যেহেতু জমিটি রেলওয়ের, তাই কেউ যদি অবৈধ দখল করে আর রেলওয়ের এস্টেট বিভাগ উচ্ছেদের জন্য আমার সাহায্যে চায় তবে আমি অবশ্যই উচ্ছেদ করে দেব।’

সর্বশেষ খবর