রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সদর হাসপাতালে নেই জলাতঙ্ক টিকা, বিপাকে দরিদ্র রোগী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না জলাতঙ্কের টিকা—এআরভি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঢাকা থেকে এই টিকা সরবরাহ করছে না বিধায় আপাতত এআরভি প্রদান করা যাচ্ছে না বলে জরুরি বিভাগে নোটিস লাগিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সংকটে পড়েছেন এলাকার অসংখ্য দরিদ্র মানুষ।

জানা যায়, বিভিন্ন কোম্পানি থেকে এই টিকা বাজারে সরবরাহ করা হলেও এর দাম অনেক বেশি। নোভার্টিজের রাবিপুর নামে এই টিকার এক ডোজের দাম ৬৪০ টাকা। ইনসেপ্টার র‌্যাবিক্স ভিসির দাম ৫০০ টাকা। অন্য কোম্পানিও একই দামে টিকা বাজারে বিক্রি করছে। কাউকে কুকুর অথবা জলাতঙ্কবাহী কোনো প্রাণী কামড়ালে এই টিকার পাঁচটি ডোজ নিতে হয়। বেসরকারিভাবে নিয়ে গেলে যার খরচ পরে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। অথচ সদর হাসপাতাল থেকে এই টিকা প্রদান করা হয় বিনামূল্যে। ফলে যাদের এত টাকা খরচ করে টিকা নেওয়ার সামর্থ্য নেই তারা দৌড়াচ্ছেন কবিরাজের কাছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে এই টিকা গ্রহণ করেছেন ২০০ জন। এর মধ্যে কুকুর কামড়ের জন্য ৭২ এবং অন্য প্রাণীর কামড়ে ১২৮ জন। চলতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে এই টিকা গ্রহণ করেছেন ৩১ জন। এরপর টিকা শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে সরবরাহ বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি ভয়ানক হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কুকুরের কামড় বেড়ে যায়। এটা তাদের প্রজনন কাল। বর্তমানে প্রতিদিন ১৫-২০ রোগী হাসপাতাল থেকে টিকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনে এআরভি টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন বেশকিছু রোগী। উপড়ে টাঙানো নোটিস দেখে তারা হতাশ হয়ে কর্তৃপক্ষকে গালাগালও করছেন। অনেকে ফিরে যাচ্ছেন আবার অনেকে ডাক্তার নার্সদের অনুরোধ করছেন। হাড়িভাষা থেকে সাত বছরের ছেলে নাঈমকে নিয়ে আসা মা আনোয়ারা বলেন, ‘তিন দিন আগে ছেলেকে কুকুর কামড়েছে। দুই দিন ধরে টিকার জন্য হাসপাতালে ঘুরছি। দোকান থেকে কিনে এই টিকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাজিউর রহমান রাজু জানান, কিছুদিন থেকে এআরভি টিকা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এসে ভিড় করছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি।

সর্বশেষ খবর