ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ছড়াছড়ি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা নিয়মিত ভাতাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। এ ঘটনায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা ৪ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মো. ছাবদার রহমান মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরপর থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা বেকায়দায় পড়েছেন।
গেজেট মোতাবেক হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ২৩৫ জন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৭১ জনই ভুয়া। ২০১৩-১৪ সালে প্রকাশিত গেজেট মোতাবেক যারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ভাতুড়িয়া গ্রামের ডা. রইচ উদ্দিন এবং পারফলসী গ্রামের সামছুল হক চিহ্নিত রাজাকার ও পিস কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়াও ২০০৫ সালের ১ ডিসেম্বর বিএনপি জোট সরকারের সময় হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় কমপক্ষে ১৯ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রইচ উদ্দিন স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পিস কমিটির সদস্য হিসেবে রাজাকারদের সহায়তা করেছেন। সেই রাজাকার অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নিয়মিত ভাতা তুলে যাচ্ছেন। এ ছাড়া অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম সরকারি গেজেট, অতিরিক্ত গেজেট, বিশেষ গেজেট ও লাল মুক্তি বার্তায় না থাকলেও অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উঠিয়ে ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৮ জন জামায়াতের সক্রিয় নেতা-কর্মী।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কোটায় চাকরি, মাসিক ভাতা এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভের জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা ৮-৯ বছরের শিশু এবং রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও সোনাতনপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিকের ৩ ছেলে, ১ মেয়ে ও ভাতুড়িয়া গ্রামের মুসা ফকিরের সন্তান ভুয়া সনদ কোটায় পুলিশে চাকরি নিয়েছেন।সিদ্দিক চেয়ারম্যানের সনদ বাতিল, চাকরির সুষ্ঠু তদন্ত ও ভাতা বন্ধের দাবি জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও দুদকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবদার রহমান।