শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে চার স্কুলের মাঠে হাট

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে চার স্কুলের মাঠে হাট

পঞ্চগড় সদরের টুনির হাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়

পঞ্চগড় সদর উপজেলার চারটি স্কুল মাঠে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নিয়মিত বসছে হাট। হাটের দিন নিয়ম বহির্ভূতভাবে আগেই শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়। ফলে এসব বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় খারাপ করার পাশাপাশি দিন দিন উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে। মাঠে হাট বসার কারণে খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, কাজল দিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টুনির হাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, টুনির হাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং টুনির হাট বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ দখল করে প্রতি সোমবার ও শুক্রবার হাট বসছে। এ জন্য সোমবার বিদ্যালয়গুলো ছুটি দেওয়া হয় দুপুরেই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সচেতন ব্যক্তিবর্গ স্কুলমাঠে হাট বসানোর বিরোধিতা করলেও সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের তত্পরতায় এক দশক থেকে হাট বসানো হচ্ছে। জেসমিন আক্তার এবং ফারজানা নামে দুই ছাত্রী জানায়, সোমবার দুপুর পর্যন্ত ক্লাস হলেও সকালেই মাঠে হাট বসে যায়। ফলে কোলাহলের কারণে শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ থাকে না। ছায়দার রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘কষ্ট করে সন্তানদের লেখাপড়া শেখাচ্ছি। সোমবার মাঠে হাট বসার কারণে আমার দুই ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চায় না। ওইদিন ক্লাস হয় না।’ টুনির হাট নামে পরিচিত এই হাটটির ইজারাদাররা জানান, প্রশাসনের সব মহলকে জানিয়েই তারা স্কুলমাঠে হাট বসাচ্ছেন। প্রত্যেক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিকে এজন্য প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। ইজারাদার হারুন অর রশিদ জানান, যুবলীগের স্থানীয় নেতা জালাল উদ্দিন, আবু বকর সিদ্দিক এবং তিনি মিলে সরকারি কোষাগারে প্রায় আট লাখ টাকা দিয়ে এই হাট ইজারা নিয়েছেন। সোম ও শুক্রবার সকাল থেকেই হাট শুরু হয়। ফলে সোমবার বিদ্যালয়গুলো দুপুরেই ছুটি দেওয়া হয়। এই চার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, মাঠে হাট বসায় পড়াশোনার খতি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করতে পারছে না। শারীরিক ও মানষিকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। টুনির হাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, ‘যারা হাট পরিচালনা করেন তারা খুবই প্রভাবশালী। দলীয় প্রভাবেই স্কুলমাঠে হাট বসান। এখানে আমরা নিরুপায়।’ টুনির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্বাস আলী জানান, আপনারা সাংবাদিকরা হাট বন্ধ করতে পারলে করেন। এই হাটের ব্যাপারে সবাই জানে। ইজারাদারের কাছ থেকে প্রতিবছর ৪০ হাজার টাকা নেওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউনুস এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও লায়লা মুনতাজেরী দিনা বলেন, ‘বিষয়টি নজরে এসেছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’

সর্বশেষ খবর