ভোলা জেলার চরফ্যাশনের দক্ষিণাঞ্চলে চর কচ্ছপিয়া, চর মন্তাজ, চর পাতিলা, চর দাঁতভাঙ্গা, কালকিনি, চর মানিকা, চর নিজাম, চর কুকরী-মুকরী, ঢালচরসহ মনপুরা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগান রয়েছে। এসব এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে কয়েক’শ ছোট-বড় খাল। এসব খালে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে বিপুল পরিমাণ কাঁকড়া। কাঁকড়া চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ এলাকাগুলো সাগর ও নদীপ্রধান হওয়ায় খাল ও পুকুরে জাল দিয়ে হ্যাচারি তৈরি করে অনায়াসে কাঁকড়া চাষ করা হয়। লবণাক্ত পানির কারণে কাঁকড়া চাষে অনেক সুবিধা রয়েছে। চর কুকরী এলাকার কাঁকড়া চাষি ফিরোজ মেম্বার জানান, তিনি ২০১৩ সালে এফডিবি সংস্থার সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে পুকুরে নেটজাল দিয়ে কাঁকড়া চাষ শুরু করেন। তার মতো একই এলাকার সবুজ, সাত্তার, বাবুল মুন্সি, সিরাজ হালাদারসহ শতাধিক চাষি কাঁকড়া চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। জানা গেছে, ১০০ গ্রাম ওজনের নিচে প্রতি পিস কাঁকড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা হারে প্রতি কেজি বিক্রি করা হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। গ্রেড সাইজ হলো ২০০ গ্রাম (গর্দা) এর ওপরে প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, ৩০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হয়। এসব কাঁকড়া প্রতিদিন ঢাকায় চালান করা হয়। বিদেশিদের কাছে কাঁকড়া প্রিয় হওয়ায় ঢাকায় নামি দামি অনেক চাইনিজ হোটেলে কাঁকড়া বিক্রি হচ্ছে।
চর কচ্ছপিয়া ঘাটের কাঁকড়া ব্যবসায়ী সিরাজ জানান, তার আড়তের অধীনে প্রায় শতাধিক কাঁকড়া শিকারি রয়েছে। চাষি ও শিকারিরা কাঁকড়া এনে তার আড়তে বিক্রি করেন। প্রতিদিন তিনি ঢাকা মোকামের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাঁকড়া কেনেন। এসব কাঁকড়া প্রতিদিন লঞ্চযোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠান। সেখান থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের অন্তত ১৮টি দেশে এ কাঁকড়া রপ্তানি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কাঁকড়া চাষের উপর সরকারিভাবে প্রকল্প করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে চাষিদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।