বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুর্নীতি জনবল সংকটে বিপর্যস্ত রায়পুর মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অবস্থিত দেশের অন্যতম মত্স্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন কার্যক্রম। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন খামারিরা। সুবিধা লুটছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা।

প্রতিষ্ঠানটিতে ৮১ জনের অনুমোদিত জনবলের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৩১ জন। এতে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন দায়িত্বরত কর্মচারীরা। তাছাড়া পুকুরগুলো বহু বছরের পুরান হওয়ায় পাড় ভেঙে অগভীর হয়ে গেছে। পুকুরের গভীরতা ও হ্যাচারির ইউনিটগুলোর ধারণক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার। এছাড়া দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তার অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি ঐতিহ্য হারাতে বসেছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ রয়েছে, রেণু পোনা বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজার আবুল কালাম সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করছেন। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার আবুল কালাম নোয়াখালী জেলার জালাল উদ্দিন নামের এক খামারি কাছে চার কেজি রেণু বিক্রি করেন পনের হাজার ৬৫০ টাকা। রসিদও দেন ওই টাকার। কিন্তু ওই কর্মকর্তা সরকারি হিসাবের মূল্য তালিকার রসিদে উঠিয়েছেন মাত্র দুই হাজার ৬২০ টাকা। আর রেণুর পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র ৫০০ গ্রাম। এভাবে বহু খামারির রসিদে এক রকম আর সরকারি রসিদে টাকার অঙ্ক অন্য রকম উল্লেখ করে অর্থ লোপাটের করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে বড় বড় ‘মা মাছ’ কর্মকর্তারা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে আবুল কালাম ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন জড়িত বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী। রেণু ও পোনা বিক্রিতে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন আবুল কালাম। এ সময় আবুল কালামের স্বাক্ষরকৃত বাড়তি টাকা আদায়ের রসিদ দেখানোর পর তিনি এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। অপর অভিযুক্ত কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিনও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রায়পুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মত্স্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। তদারকি না থাকায় এর ভিতরে গড়ে উঠেছে মাদকসেবীদের আস্তানা। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়।

সর্বশেষ খবর