বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চৌগাছায় দারোগাকে বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনি, ধাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

‘দোকানে ইয়াবা আছে’— এই অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে আটক করতে গিয়ে পিটুনি খেয়েছেন সিরাজুল ইসলাম নামে পুলিশের এক এএসআই। উত্তেজিত ব্যবসায়ীদের রোষ থেকে বাঁচতে তিনি দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পান। গতকাল দুপুরে চৌগাছা বাজারে এ ঘটনার পরপরই ওই বাজারের শত শত ব্যবসায়ী দোকানপাট বন্ধ করে দারোগা সিরাজের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেলা দেড়টার দিকে চৌগাছা থানার এএসআই সিরাজুল ইসলাম শহরের মেইন রোডে সুপার ইলেকট্রিক অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ নামের একটি দোকানে একজন সোর্সকে পাঠিয়ে তিনি কিছুটা দূরে অপেক্ষা করছিলেন। ওই সোর্স দোকানের মধ্যে ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে আসার পরপরই এএসআই সিরাজ দোকানটিতে ঢোকেন। তিনি দোকান মালিক রাবণ কুমারকে দোকানে ইয়াবা রাখার অপরাধে আটক করতে উদ্যত হন। এ সময় রাবণ কুমার নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে থাকেন। হৈচৈ শুনে আশপাশের দোকানের মালিক-কর্মচারীরা এগিয়ে আসেন। রাবণ কুমার বলেন, আমি মাদকের কারবার করি না। নিশ্চয় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। ফুটেজ দেখার কথা বলতেই দারোগা সিরাজ ও সোর্স আকাশ ওই দোকান থেকে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন সিরাজকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি দৌড় দিলে উত্তেজিত জনতা তাকে পাকড়াও করার জন্য শহরের ভাস্কর্যের মোড় পর্যন্ত ধাওয়া করে।

খবর পেয়ে ছুটে আসেন চৌগাছা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মারুফ আক্তার, চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূরউদ্দীন আল মামুন হিমেল ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদৎ হোসেন। তারা এ ঘটনার বিচার হবে বলে আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ ক্ষ্যান্ত দেন। এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মসিউর রহমান বলেন, আকাশ নামের একটা ছেলে ওই দোকানে ইয়াবা রেখে পুলিশকে খবর দিয়েছিল। পুলিশ সেখানে গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আকাশই দোকানে ইয়াবা রেখে পুলিশকে খবর দিয়েছিল। ওসি বলেন, আকাশকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। আকাশ পুলিশের সোর্স কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, আকাশ পুলিশের সোর্স নয়। সে চৌগাছা শহরের বেলেরমাঠ এলাকার ফিরোজ শেখের ছেলে। ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আকাশ জানিয়েছে, ওই দোকানের এক কর্মচারীর সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল। এর আগে ওই কর্মচারীর হাতে সে মারও খেয়েছিল। তাই প্রতিশোধ নিতেই সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

সর্বশেষ খবর