বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শ্রীপুরে খাস পুকুর ভরাট করে প্রাচীর

শ্রীপুর প্রতিনিধি

শ্রীপুরে খাস পুকুর ভরাট করে প্রাচীর

পুকুর ভরাট করতে প্রাচীর নির্মাণ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটী গ্রামে খাস পুকুর ভরাট করে পাড়জুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁশ, রড ও টিনের প্রাচীর। দখলের উদ্দেশ্যে প্রাচীরের ভেতর রাত-দিন চলছে পাকা স্থাপনা তৈরির কাজ। জানা গেছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে খাস পুকুরটি ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণ করছে একটি প্রতিষ্ঠান।

গাজীপুর বারের সাবেক সম্পাদক শামসুল আলম প্রধান জানান, পুকুরটি গতানুগতিকভাবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হতো। ঢাকা কাফরুলের বাসিন্দা কর্নেল (অব.) মজিবুর রহমান পুকুরটি নিজের মালিকানা দাবি করে ১৯৮৯ সালে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে মামলা করেন। বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করে আদালত শ্রীপুর মৌজায় ৩.৫৭ একর জমি ও পুকুরটি ‘সাধারণের ব্যবহার্য্য’ বলে রায় দেন। গাজীপুর জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলি আমজাদ হোসেন বাবুল জানান, পরবর্তীতে মজিবুর রহমান গাজীপুর দ্বিতীয় সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই জমিতে দেওয়া হয় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করলে মামলাটি অতিরিক্ত জেলা জজ ১ম আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন। এরপর কর্নেল মজিবুর রহমান উচ্চ আদালতে আপিল করলে মামলাটি এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। এলাকাবাসী জানান, মজিবুর রহমানের কাছ থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের লোকজন জমিটি আমমোক্তারনামা দলিল করে নেন। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর তারা পুকুরের চারপাশে প্রথমে বাঁশের খুঁটি দিয়ে প্রাচীর বানান। কিছুদিন পর রড এবং টিন দিয়ে তৈরি করা হয় প্রাচীর। গত তিন সপ্তাহ ধরে পুকুরটি বালি ও মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, খাস পুকুর ব্যক্তি মালিকানায় নেওয়ার জন্য মজিবুর রহমান সহযোগীদের দ্বারা জাল দলিলও তৈরি করেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাচীরের ভেতরে পুকুর ভরাট চলছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দেন। তাছাড়া অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির ওয়েব সাইটে যেসব মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে। শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম রেজা জানান, আদালতের স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও মাটি ভরাটের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আদালতকে জানানো হয়েছে। ভরাট না করার ব্যাপারে শ্রীপুর পুলিশকেও বলা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি জানান, পুকুরে প্রাচীর নির্মাণ বা মাটি ভরাটের বিষয়ে কেউ তাকে অবহিত করেনি।

সর্বশেষ খবর