বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় চরফ্যাশন জেলেপল্লীর শিশুরা

চরফ্যাশন প্রতিনিধি

ভোলার চরফ্যাশন উপকূলীয় জেলে পল্লীর অধিকাংশ শিশু এখনো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত। এমনকি তিন বেলা খাবারও তারা অনেক সময় পায় না। দারিদ্র্যের কারণে এ শিশুরা নিয়োজিত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে বয়সে খেলাধুলা আর বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা ঠিক সে বয়সে জেলে পল্লীর শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নৌকার বৈঠা। সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে তারা মাছ ধরছে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে। মাছ ধরার এই ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত পল্লীর প্রায় ৫০ হাজার শিশু। পেটের তাগিদে কখনো কখনো তারা যাচ্ছে উত্তাল সাগরেও। সরকার শিশু শিক্ষায় নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার ছোয়া লাগেনি জেলে পল্লীতে। ফলে দিন দিন বাড়ছে জেলে শিশুর সংখ্যা। নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসব শিশু গ্রহণ করতে পারছে না প্রাথমিক শিক্ষা। এদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও রয়ে গেছে অবহেলার মধ্যেই। শিশু আরিফ (১৪) জানায়, ক্লাস থ্রিতে পড়ছি, ফোরে উঠবো। এখন সময় হয়েছে বাবার সঙ্গে বাগদা, গলদা চিংড়ি ধরতে যাওয়ার। বাবা অন্যের নৌকা ভাড়া নিয়ে কাজ করেন। সারাদিন বাবা-ছেলে মিলে যা পাই তা দিয়ে আমাগো সংসার চলে। চরফ্যাশনের মৎস্যজীবীদের নিয়ে কাজ করছে এমন একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ সূত্রে জানা গেছে, উপকূলের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। মাছ ধরা ও কৃষিকাজ তাদের প্রধান পেশা। বিকল্প আয়ের উৎস না থাকায় শিশুদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। অশিক্ষিত অভিভাবক, শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞতা, দরিদ্রতা, বাবার পেশায় ঝুঁকে পড়ার টান ও মুনাফালোভীদের কারণে জেলে পল্লীর শিশুরা অকালে ঝরে পড়ে।

সর্বশেষ খবর