শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের অভিযোগপত্রে এলাকাবাসীর অসন্তোষ, বিক্ষোভ স্মারকলিপি

পাবনা প্রতিনিধি

পুলিশের অভিযোগপত্রে এলাকাবাসীর অসন্তোষ, বিক্ষোভ স্মারকলিপি

সেবায়েত নিত্যরঞ্জন হত্যা মামলায় পুলিশের অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ— বাংলাদেশ প্রতিদিন

পাবনায় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র আশ্রমের সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে হত্যার ঘটনায় নিরীহ লোকজনের নামে চার্জশিট দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। হেমায়েতপুর এলাকার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ বুধবার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ করেন। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাও বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে চাঞ্চল্যকর এই হত্যার পুনঃতদন্ত দাবি করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, আলোচিত এ হত্যা তদন্তে আশ্রমের আর্থিক অনিয়ম ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি উঠে আসে। অথচ পুলিশ উেকাচের বিনিময়ে আশ্রমের সন্দেহভাজন কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে ওই এলাকার নিরীহ লোকজনের নামে চার্জশিট দেয়। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো— হেমায়েতপুর গ্রামের আবুল হাশেম, জালাল শেখ, আনোয়ার হোসেন, কিসমত প্রতাপপুর খাঁপাড়ার হারুন খাঁ, বুধেরহাট গ্রামের সোহেল হোসেন, শাহিন শেখ, হেমায়েতপুর ট্যাংকিপাড়ার মো. রফিক, আব্দুস সালাম, কাশিপুর মোড়ের জাহিদুল ইসলাম, বোর্ডঘর এলাকার সাইফুল ইসলাম, হেমায়েতপুর পূর্বপাড়ার বেটে সোহেল। গত ১০ জুন ভোরে পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সাড়ে চার মাস তদন্তের পর এসআই আবু কুদ্দুস মুন্সি গত ৩১ অক্টোবর ১১ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এই আসামিরা সবাই দিনমজুর এবং হেমায়েতপুর ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আশ্রমে ‘অসামাজিক কাজে বাধা পেয়ে এবং চাঁদা না দেওয়ায়’ আসামিরা নিত্যরঞ্জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। তবে র‌্যাবের দাবি, সেবায়েত নিত্যরঞ্জনকে হত্যায় ছিল ‘নব্য জেএমবি’।

আসামি শাহিন শেখ বলেন, ‘কেন আমাদের নামে চার্জশিট দেওয়া হলো বোধগম্য নয়। আসলে প্রকৃত আসামিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখার অপচেষ্টা করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। বেশির ভাগ আসামিই দিনমজুর ও অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।’ অপর এক আসামির ভাষ্য, মূল কারণ আশ্রমের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ। প্রথমদিকে আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক যুগল কিশোর ঘোষও আসামি ছিলেন। অজ্ঞাত কারণে তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু কুদ্দুস মুন্সি জানান, এই হত্যার ঘটনা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্তসাপেক্ষে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। উেকাচ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। চার্জশিটভুক্ত ১১ জনের মধ্যে সাতজন পলাতক। এ বিষয়ে আশ্রমের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক যুগল কিশোর ঘোষের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ফোন না ধরে সেটি বন্ধ করে দেন। আশ্রমের কেন্দ ীয় পরিষদ সদস্য বলাই কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই, আমরা তো বলির পাঁঠা।’ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন বলেন, ‘এই অভিযোগপত্রে নিরীহ মানুষদের আসামি করা হয়েছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এই অভিযোগপত্র বাতিল করে পুনরায় তদন্ত করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর